![বঙ্গ বিজেপির পরবর্তী সভাপতি হবেন কে? 2 1632172736 sukanta98](https://citytodaynews.com/wp-content/uploads/2024/06/1632172736_sukanta98.jpg)
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির বর্তমান সভাপতির বিদায় আসন্ন। মূলত বাংলায় দলের খারাপ ফলের কারণে সভাপতি বদল দরকার হয়ে পড়েছে। বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে এই কারণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে বিজেপির ফল ভালো হওয়ায় একজনকে মন্ত্রী করতেই হত। এবার এনডিএ শরিক দলগুলির ওপর নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় বিজেপির মন্ত্রীসংখ্যা কমাতে হয়েছে। গতবার উত্তরবঙ্গের দু’জন বিজেপি সাংসদকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হয়েছিল— নিশীথ প্রামাণিক ও দেবশ্রী চৌধুরী। এবারের লোকসভা নির্বাচনে দু’জনেই পরাস্ত হয়েছেন। এবার তাই একজনকে মন্ত্রী করা হয়েছে। সব হিসাব করে সুকান্ত মজুমদারকেই মন্ত্রী করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে একজনকে মন্ত্রী করা হল, আবার বাংলার সভাপতি পদ থেকেও তাঁকে সরানোর রাস্তা তৈরি হল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির পরবর্তী সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
প্রথম যে নামটি নিয়ে বেশি চর্চা হচ্ছে, সেটি হল প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, যিনি এবারের লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের কাছে। পরাজয়ের কারণ হিসাবে দিলীপ তাঁর কেন্দ্র বদল নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। খড়্গপুর কেন্দ্র থেকে তিনি বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন। সেখানে তিনি নিজের সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তাঁর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে। আর দিলীপকে শেষের দিকে পাঠানো হয় বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে সেভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেননি। এই কেন্দ্রে আগের বহিরাগত সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে নিয়ে সেখানকার মানুষের ক্ষোভ ছিল নিয়মিত যোগাযোগ না রাখার কারণে। ফের অন্য কেন্দ্র থেকে দিলীপকে নিয়ে আসা এবং সুরিন্দরকে আসানসোলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া নিয়ে ভোটারদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে। শেষে দিলীপ, অগ্নিমিত্রা, সুরিন্দর তিনজনই পরাস্ত হন। এই হার মন থেকে মেনে নিতে পারেননি দিলীপ। দক্ষিণবঙ্গে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি বিজেপি। এ রাজ্যে বিজেপির সুদিন ফিরেছিল দিলীপের হাত ধরেই। রাজ্যে সাংগঠনিক দিক থেকে তিনি যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিলেন। গত নির্বাচনে বিজেপি দু’টি থেকে আঠারোটি আসনে জয়ী হয়েছিল। আর এবার সুকান্ত মজুমদার-শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির আসন কমে হয়েছে বারো। তাই দলের ভিতরে আবার দিলীপ ঘোষকে সভাপতি পদে ফেরানোর ডাক পড়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, দিলীপ কি দিল্লির কর্তাদের ‘গুড বুকে’ আছেন তাঁর ঠোঁটকাটা স্বভাবের জন্য? যদি গুরুত্বই থাকত, তাহলে এবারের ভোটের কাজে তাঁকে দূরে রাখা হল কেন? দলের সাংগঠনিক কাজে কেন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি? আবার বর্তমানে রাজ্যে দলের হাল ধরার জন্য দিলীপের বিকল্প কে হতে পারে?
তবে শুভেন্দু অধিকারীর সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এক, তিনি বিজেপিতে নতুন এসেছেন। দুই, আরএসএস করা নন। তিন, তিনি বর্তমানে বিধানসভার প্রধান নেতার দায়িত্বে রয়েছেন। তাই বাড়তি পদ পাওয়া সম্ভব নয়। চার, এবারের নির্বাচনে খারাপ ফল। তিনিই ছিলেন ভোট পরিচালনার মূল দায়িত্বে।
বাকি থাকল পরিচিতদের মধ্যে রাহুল সিনহা, শমীক ভট্টাচার্য, অমিতাভ চক্রবর্তী, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। আরএসএস সংগঠনের দক্ষ নতুন কাউকেও সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।