রানিগঞ্জ: আসানসোলের রানিগঞ্জ এলাকার মঙ্গলপুর শিল্পাঞ্চল তীব্র দূষণের কবলে পড়েছে। স্থানীয় জনগণের ক্রমবর্ধমান অভিযোগ এবং প্রাক্তন কাউন্সিলর আরিজ জলিসের লাগাতার প্রচেষ্টার পর, বিধায়ক তাপস ব্যানার্জি সমস্যাটি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। তিনি পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা শাসক এস. পন্নাম্বলম-কে চিঠি লিখে দূষণ নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলপুর: শিল্পোন্নয়ন নাকি স্বাস্থ্য সংকট?
মঙ্গলপুর শিল্পাঞ্চল বাম আমলে ২০০০ সালে স্থাপিত হয়। এখানকার স্পঞ্জ আয়রন কারখানা থেকে ছড়ানো দূষণের কারণে আশেপাশের সাতটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এমনকি রানিগঞ্জ শহরও এর প্রভাব থেকে বাদ পড়েনি। বাতাসে ভেসে বেড়ানো কালো ছাই এবং ধুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের শ্বাস নিতে বাধা দিচ্ছে।
দূষণের পরিস্থিতি: বন্ধ দরজা-জানলাও অসহায়
মঙ্গলপুরের বাসিন্দাদের সর্বক্ষণ দরজা ও জানালা বন্ধ রাখতে হয়। তবু, ধুলো এবং ধোঁয়া জানালার ফাঁকফোকর দিয়ে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে এবং বাতাসকে বিষাক্ত করে তুলছে। এই এলাকায় গাছের পাতা, বাড়ির ছাদ, এবং খোলা উঠোন কালো ছাইয়ের স্তরে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে।
বায়ুর গুণগত মানে বিপদের ঘণ্টা
দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, রানিগঞ্জের গড় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) ২০০ থেকে ২৭৫ এর মধ্যে রয়েছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক স্তরে রয়েছে। এই অবস্থা বিশেষত শিশু, প্রবীণ এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রাণঘাতী।
বিধায়ক তাপস ব্যানার্জির বক্তব্য
বিধায়ক তাপস ব্যানার্জি বলেন, “শিল্পাঞ্চলের দূষণের কারণে এলাকার বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। শিশু ও প্রবীণরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমি জেলা শাসক এবং সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দিয়েছি, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
প্রাক্তন কাউন্সিলরের অভিযোগ
প্রাক্তন কাউন্সিলর আরিজ জলিস অভিযোগ করেন যে প্রশাসন এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড শুধুমাত্র কাগজে-কলমেই পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি দাবি করেছেন যে জেলা শাসক ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করুন এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিন।
ভবিষ্যতের কি হবে?
মঙ্গলপুরে দূষণ ক্রমাগত বাড়ছে এবং স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশাসন কি সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ নেবে নাকি এই এলাকা আরও বড় বিপদের সম্মুখীন হবে?