দামোদর ও অজয় নদী থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার অবৈধ ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে – মাফিয়া প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছে, প্রশাসনের সামনে চলছে অবাধে এই খেলা।
দামোদর ও অজয় নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এখন একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার টন বালু বেআইনিভাবে তোলা হচ্ছে, তবুও প্রশাসন এই বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। এই পরিস্থিতি অবৈধ বালু মাফিয়াদের তাদের ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে। স্থানীয় জনগণের মতে, অনেক প্রভাবশালী নেতা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা এই ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছে, এই নিরবচ্ছিন্ন বালু উত্তোলন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে এবং তাদের ঝুঁকিতে ফেলছে। নদীর পাড় ভাঙনের কারণে আশেপাশের গ্রামগুলো হুমকির মুখে। আগে যে নদী পানির উৎস এবং চাষাবাদে সহায়ক ছিল, এখন তা মাফিয়াদের অবৈধ স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ:
- অবৈধ খনন স্থানগুলি চিহ্নিত: রাজনগর, রাজস্থান, জামুই এবং বিহারের মতো এলাকাগুলোতে ব্যাপক অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে। এখানকার বহু জায়গায় বড় গর্ত করে বালু তুলে নেওয়া হচ্ছে।
- পরিবেশগত প্রভাব: বালু মাফিয়ারা নদীর পাড়ের গাছপালা নষ্ট করছে, যা স্থানীয় পরিবেশের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে।
- প্রশাসনিক উদাসীনতা: যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন কোনও কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
- পুলিশের সহযোগিতা: অভিযোগ রয়েছে যে, কিছু পুলিশ অফিসার মাফিয়াদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই অবৈধ কাজকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন।

বিশেষ প্রতিবেদন:
- মলয় পাঁজা জেলা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন: ১১ নভেম্বর, ২০২৪-এ মলয় পাঁজা জেলা কর্মকর্তার কাছে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু তার অভিযোগের পরেও তৎক্ষণাৎ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জনগণ প্রশাসনের কাছে জবাবদিহিতা দাবি করছে।
- মাফিয়ারা প্রতিদিন আরও সাহসী হয়ে উঠছে: প্রতিদিন এই অবৈধ ব্যবসা দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। ভারী মেশিনারি এবং ট্রাক দিনের বেলায় প্রকাশ্যে চলাচল করছে, যা এলাকার পরিবেশ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
- আবারও দামোদর নদী যেন মৃত্যুর প্রতীক না হয়: স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ না করা হলে দামোদর নদীও অন্য শোষিত নদীগুলোর মতো পরিস্থিতির শিকার হতে পারে। তাই নদীটি রক্ষা করার জন্য সবাই জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে।
- দিবালোকে ট্রাক এবং ট্রাক্টর চলাচল: ছবিতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে ট্রাক এবং ট্রাক্টর দিয়ে প্রকাশ্যে নদীর তল থেকে অবৈধভাবে বালু বহন করা হচ্ছে। এটি মাফিয়াদের সাহসিকতার আরও একটি প্রমাণ।
উপসংহার:
এই অবৈধ বালু উত্তোলনের অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার পরিবেশগত ক্ষতির পাশাপাশি সরকারের অর্থনৈতিক ক্ষতিও করছে। অবিলম্বে হস্তক্ষেপ প্রয়োজন যাতে নদীগুলোর আরও অবনতি না ঘটে এবং আশেপাশের এলাকার মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষা পায়। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে এই অবৈধ সাম্রাজ্য বন্ধ করা, যাতে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায়।