সাইবার প্রতারণার ফাঁদ! সরকারি ওয়েবসাইট থেকে বেটিং অ্যাপে রিডাইরেক্ট? গুগল কেন এই স্ক্যামগুলি ধরতে পারছে না

সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করে প্রতারণার ফাঁদ পাতছে সংগঠিত সাইবার অপরাধ চক্র! সম্প্রতি এক ইউটিউব ভিডিওতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গুগলের অসতর্কতার সুযোগে প্রতারণার এই চক্র সক্রিয়ভাবে সরকারি ওয়েবসাইটগুলিকে নিজেদের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন ইউটিউবার অমিত তিওয়ারি, যেখানে দেখানো হয়েছে কীভাবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করে সেগুলি বেটিং অ্যাপ ও প্রতারণামূলক ওয়েবসাইটের দিকে রিডাইরেক্ট করা হচ্ছে!

কিভাবে প্রতারণা চলছে?

✅ সরকারি ওয়েবসাইটের ভুল বা পুরনো লিংক ব্যবহার করে একটি বিশেষ চক্র এগুলিকে নিজেদের প্রতারণামূলক সাইটে রিডাইরেক্ট করছে।
Mahadev Betting App-সহ একাধিক বেআইনি ওয়েবসাইটের প্রচার চালানো হচ্ছে এসব সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
✅ অনেক ক্ষেত্রে, ডেস্কটপ থেকে খোলার সময় ৪০৪ এরর দেখানো হলেও মোবাইল থেকে প্রবেশ করলে ব্যবহারকারীদের অন্য সাইটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে!
বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষা, শিশু ও নারী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, প্রযুক্তি বোর্ডের ওয়েবসাইটও এই হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছে।
✅ এই প্রতারণা চক্র ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য, ফোন নম্বর, আধার কার্ড ও ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।

এই সাইবার প্রতারণা কতটা বিপজ্জনক?

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি কোনো অপরাধী গোষ্ঠী এই রিডাইরেক্ট করা লিংকগুলিকে নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়, তবে এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে! ভবিষ্যতে, এই চক্র ব্যাঙ্ক জালিয়াতি, পরিচয় চুরি এবং অন্যান্য বড় সাইবার অপরাধ সংগঠিত করতে পারে।

প্রশ্নের মুখে গুগলের দায়িত্বজ্ঞান!

✅ দীর্ঘদিন ধরে গুগল এই হ্যাকিং শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
✅ ইউরোপ বা আমেরিকার সরকারি ওয়েবসাইটে এমন কিছু ঘটলে গুগল কি এতটা উদাসীন থাকত?
✅ কেন সরকারি ওয়েবসাইটে থাকা অনুপযুক্ত কনটেন্ট ও সন্দেহজনক রিডাইরেক্টগুলি শনাক্ত করা হচ্ছে না?

জনসাধারণের জন্য সতর্কবার্তা!

📌 সরকারি ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় সাবধান থাকুন।
📌 অজানা লিংকে ক্লিক করবেন না।
📌 কোনো ওয়েবসাইট যদি ব্যাঙ্ক তথ্য, আধার নম্বর বা OTP চায়, তাহলে সেটি অবিলম্বে রিপোর্ট করুন।
📌 যদি কোনো সরকারি ওয়েবসাইটের লিংকে ক্লিক করার পর অন্য কোথাও রিডাইরেক্ট হয়, তাহলে সেটি অবশ্যই কর্তৃপক্ষকে জানান।

গুগল কেন এই স্ক্যামগুলি ধরতে পারছে না এবং কী করা দরকার?

গুগলের অ্যালগরিদম সাধারণত কনটেন্ট ইনডেক্সিং এবং র‍্যাংকিংয়ের জন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি অনুসরণ করে, তবে সুনির্দিষ্ট সাইবার অপরাধমূলক কার্যকলাপ চিহ্নিত করার জন্য এটি সবসময় যথেষ্ট কার্যকর নয়। বিশেষত, যখন প্রতারকরা স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডেস্কটপ ও মোবাইল ব্রাউজিংয়ের জন্য আলাদা রেসপন্স সেট করে, তখন গুগলের সাধারণ স্ক্যানিং সিস্টেম এটি শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়।

এছাড়া, গুগলের ওয়েব ক্রলার শুধুমাত্র ওপেনলি ভিজিট করা পেজগুলিকে ইনডেক্স করে, কিন্তু লুকানো বা জটিল রিডাইরেক্ট চেইন সনাক্ত করতে পারে না। এই সমস্যা মোকাবিলায় গুগলের উচিত উন্নত সাইবার সিকিউরিটি অ্যালগরিদম প্রয়োগ করা, সন্দেহজনক সরকারি ওয়েবসাইটগুলির স্বয়ংক্রিয় মনিটরিং বৃদ্ধি করা এবং প্রতারণামূলক রিডাইরেক্ট ডিটেকশন প্রযুক্তি উন্নত করা। পাশাপাশি, ব্যবহারকারীদের রিপোর্টিং সিস্টেমকে আরও কার্যকর করতে হবে, যাতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো যায় এবং ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হয়।

ghanty

Leave a comment