কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন যে গঙ্গাসাগর মেলা “মহাকুম্ভের থেকেও বড়”, তাই কেন্দ্রীয় সরকারকে এটিকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, কেন্দ্র কুম্ভ মেলার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে, কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলার সমস্ত ব্যবস্থাপনা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেই করতে হয়।
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য রাজ্য সরকারের বিশাল প্রস্তুতি
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে ৩২টি জলযান ও ১০০টি মোটর লঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা প্রতিদিন ২০ ঘণ্টা চলবে। এছাড়া, ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ বাস বিভিন্ন রাজ্য থেকে তীর্থযাত্রীদের গঙ্গাসাগর নিয়ে আসবে।
ভাষাগত বাধা কাটাতে বিশেষ ব্যবস্থা
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে রাজ্য সরকার প্রতিটি বাসে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে, যাতে ভাষাগত সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন ভাষায় ঘোষণা করার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায় বিশেষ জোর
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গঙ্গাসাগর মেলায় তীর্থযাত্রীদের জন্য ৫৫০ শয্যার হাসপাতাল, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, জল অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তীর্থযাত্রীদের জন্য বিমা কভার
রাজ্য সরকার ৯ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত গঙ্গাসাগর মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের জন্য ৫ লক্ষ টাকার বিমা কভার ঘোষণা করেছে।
মুরিগঙ্গার উপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গঙ্গাসাগরে পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন, কারণ তীর্থযাত্রীদের মুরিগঙ্গা নদী পার হতে হয় এবং তারপর ৩০ কিমি রাস্তা অতিক্রম করতে হয়। তাই রাজ্য সরকার ১,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে পাঁচ কিমি দীর্ঘ চার লেনের সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকল্পের টেন্ডারিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
“গঙ্গাসাগর মেলা জাতীয় মেলার স্বীকৃতি পাক”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ১০ বছর ধরে রাজ্য সরকার গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তীর্থযাত্রীদের স্বাগত জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা আমাদের অতিথি, আপনাদের যেন বাড়ির মতো অনুভূতি হয়”।