ঢাকা/কলকাতা: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দুদের উপর হামলা এবং মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রামে সম্প্রতি তিনটি হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুরের খবর এসেছে, এবং একইসঙ্গে ইস্কন মন্দির বন্ধ করে সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এবং তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যেই বাংলাদেশের মৌলানা ইনায়েতুল্লাহ আব্বাসির এক বিতর্কিত মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ককে উত্তপ্ত করে তুলেছে।
মৌলানার হুমকি কী?
মৌলানা ইনায়েতুল্লাহ আব্বাসি হুমকি দিয়ে বলেছেন, “১৪ কোটি বাংলাদেশি মুসলিম তাদের ২৮ কোটি হাতে লাঠি নিয়ে রেড ফোর্ট দখল করবে। আমি মোদী এবং মমতা দু’জনকেই সাবধান করে বলছি, বাংলাদেশে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করলে সেই হাত আমরা ভেঙে দেব। বাংলাদেশের শত্রু হলো ভারত।”

এই মন্তব্যের পরে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মন্দির ভাঙচুর ও সংঘর্ষ:
চট্টগ্রামে গত শুক্রবার একদল উগ্র জনতা শান্তানেশ্বরী মাতৃ মন্দির, শনি মন্দির, এবং শান্তানেশ্বরী কালীবাড়ি মন্দিরে হামলা চালায়। ‘বিডিনিউজ২৪ ডট কম’ জানিয়েছে, দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রামের হরিশ চন্দ্র মুন্সেফ লেনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে, ইস্কন-এর প্রাক্তন সদস্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকেই এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত:
‘সনাতন জাগরণ জোট’-এর মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি চট্টগ্রামে গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অপমান করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে দাসকে গ্রেফতার করা হয় এবং আদালতে পেশ করার সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে এক ৩২ বছর বয়সী আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের প্রতিক্রিয়া:
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দুদের উপর হওয়া হামলার ঘটনাগুলি নিন্দা করেছেন এবং এটিকে বর্তমান সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেছেন। অপরদিকে, ভারতের সরকারও পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে এবং উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে।
বাংলাদেশে হিন্দুদের অবস্থা:
হিন্দুদের উপর ক্রমাগত হামলা এবং তাদের মন্দির ও সংস্কৃতি ধ্বংস করার চেষ্টার মধ্যে মৌলানা ইনায়েতুল্লাহ আব্বাসির মতো বক্তব্য হিংসা আরও উসকে দিচ্ছে। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা কীভাবে একটি দেশের শান্তি ও অগ্রগতিকে বাধা দিতে পারে, তা এই ঘটনাগুলি থেকে স্পষ্ট।












