সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন আবেদন নিয়ে মন্তব্য করেছে, “প্রথম দর্শনে আপনি একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি।” বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং উজ্জল ভূইঞার বেঞ্চ জামিনের আবেদন গ্রহণ না করে বিষয়টি নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়, যিনি শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির মামলায় মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত, তার পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রোহাতগী অন্য রাজ্যের মন্ত্রীদের জামিনের উদাহরণ দিয়ে সমতা দাবি করেন। তবে, বেঞ্চ এই দাবি খারিজ করে বলেন, “তামিলনাড়ুর মন্ত্রী জামিন পেয়েছেন মানেই আপনি পাবেন? দেশের সমস্ত মন্ত্রীদের মধ্যে কোনও সমিতি নেই।”
বেঞ্চ আরও স্পষ্ট করে জানায় যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রী ছিলেন, অন্য অভিযুক্তরা যারা জামিন পেয়েছেন, তারা মন্ত্রী ছিলেন না। তাই পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাদের সাথে সমতার দাবি করতে পারবেন না। আদালত জানিয়েছে যে বিষয়টি শুধুমাত্র জামিন দিলে বিচার প্রক্রিয়ার উপর কী প্রভাব পড়বে, তা দেখাই গুরুত্বপূর্ণ। তবে একইসাথে কারাবাস চিরকালীন হতে পারে না বলেও আদালত মত প্রকাশ করে।
কারাবাসে দুই বছর: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কারাবাস ইতিমধ্যেই দুই বছর অতিক্রম করেছে। বেঞ্চ জানিয়েছে যে তিনি জামিনের যোগ্য হলে একদিনেরও বেশি দেরি করা ঠিক নয়। আদালত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে নির্দেশ দেয় যে তারা কি তাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।
গত ২৩ জুলাই, ২০২২-এ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট, ২০০২-এর অধীনে অভিযুক্ত করা হয়। তার বাড়ি থেকে বিশাল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার হয়। গ্রেফতারের পরে, তাকে মন্ত্রিত্ব এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
বেঞ্চের কড়া বক্তব্য: সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যে ইডি-র দুর্বল কনভিকশন রেট এবং দীর্ঘ তদন্ত প্রক্রিয়ার কারণে বিচার কার্য শুরু হয়নি। বেঞ্চ বলেছে, “দুই বছর ধরে তদন্ত চলছে। এত সময় লাগার কি প্রয়োজন?”
শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি: এই মামলাটি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাখাতে দুর্নীতির অন্যতম বড় উদাহরণ। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষক নিয়োগে চরম অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেন হয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্তদের একজন।