আসানসোলের ২৯৩ বছরের পুরনো দুর্গাপুজো: ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা অটুট!

আসানসোল গ্রামের দুর্গাপুজো, যা প্রায় ২৯৩ বছর ধরে চলছে, আজও তার পুরনো রীতিনীতি ও ঐতিহ্য মেনে পালিত হয়। গ্রামে প্রতি বছর ৯টি দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়, যেখানে একসাথে নবান্নের সময় নবপত্রিকা স্নান বা কালা বউয়ের রীতি পালিত হয়। এই বছরও চার দিনের পুজো শেষে দশমীর সন্ধ্যায় ৯টি দুর্গা প্রতিমার বিশেষ শোভাযাত্রা সহ বিসর্জন করা হবে।

দশমীর আয়োজন এবং সিন্দুরখেলা
বিসর্জনের আগে আসানসোল গ্রামের সংলগ্ন রামসে ময়দানে বর্ণাঢ্য আতশবাজির প্রদর্শনী হবে। এরপর রামসে পুকুরে একে একে ৯টি দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন হবে। আসানসোল গ্রামের এই ৯টি পুজোয় সিন্দুরখেলার বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে, যা এই বছরও পালন করা হবে। যদিও মায়ের বলি দেওয়ার রীতি বন্ধ হয়েছে, তবুও ৯টি পুজোর মধ্যে মাত্র ২টিতে এখনও বকরির বলির রীতি চালু রয়েছে।

ঐতিহ্যের ধারা
আসানসোল গ্রাম দুর্গাপুজো কমিটির সভাপতি এবং শ্রী শ্রী নীলকণ্ঠেশ্বর জিউ দেবোত্তর ট্রাস্টের প্রধান, শচীন রায় জানিয়েছেন, আসানসোল গ্রামের ৮টি দুর্গাপ্রতিমা আজও প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারা মেনে তৈরি করা হয়। দশমীর দিন সকল প্রতিমা একসাথে রামসে পুকুর থেকে মন্দিরে আনা হয় এবং গ্রামবাসী মহিলারা সেদিন সিন্দুরখেলায় অংশগ্রহণ করেন। বিকালে প্রতিমার বিসর্জন দেওয়ার আগে পুরোনো রীতিনীতি মেনে চলা হয়।

৯টি পুজোর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
শচীন রায় আরও জানালেন, প্রায় ৩০০ বছর আগে নকদী রায় এবং রামকৃষ্ণ রায় আসানসোল গ্রামের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারা দুজন পঞ্চকোট রাজ্যের সাহসী যোদ্ধা ছিলেন, যাদের নেতৃত্বে বৃহত্তর বাংলা বর্গীদের হাত থেকে রক্ষা পায়। বর্তমানে রায় পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি, যারা আসানসোল ও বুধা গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে। রায় পরিবারের সদস্যরাই এই ৯টি দুর্গাপুজো আজও পালন করে চলেছে। আসানসোল গ্রামের এই পুজো ‘বড় দুর্গা’, ‘মেজ দুর্গা’ এবং ‘ছোট দুর্গা’ নামে পরিচিত।

ghanty

Leave a comment