আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে মৃত্যুদণ্ড নয়, বরং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই রায় ঘোষণা করেছেন সেশন কোর্টের বিচারক অনির্বাণ দাস। সিবিআই-এর পক্ষ থেকে মৃত্যুদণ্ডের দাবি করা হলেও আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করে। এই ঘটনার পর থেকেই এটি চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
বিচারকের সিদ্ধান্ত: কেন ফাঁসি দেওয়া হলো না?
বিচারক অনির্বাণ দাস তাঁর রায়ে উল্লেখ করেন যে অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য “রেয়ারেস্ট অফ রেয়ার” (সবচেয়ে বিরল এবং গুরুতর) মামলার মানদণ্ড পূরণ হওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, এই ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের দাবি যথেষ্ট কারণসমৃদ্ধ ছিল না। তবে, এটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ₹৫০,০০০ টাকার জরিমানা করেন।
সিবিআই-এর আবেদন নিয়ে প্রশ্ন
এই মামলায় সিবিআই অভিযুক্তের জন্য মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছিল। তবে, তাদের তদন্ত এবং যুক্তি আদালতকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট করতে পারেনি। প্রশ্ন ওঠে, সিবিআই-এর তদন্ত ও মামলার উপস্থাপনায় কী ধরনের ত্রুটি ছিল, যার কারণে অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া সম্ভব হয়নি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু সিবিআই-এর তদন্ত বিচার প্রক্রিয়াকে দুর্বল করেছে। এমন অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডই সঠিক শাস্তি হতে পারত।”
অপরাজিতা বিল এবং কঠোর আইন প্রয়োজন
এই ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় “অপরাজিতা মহিলা ও শিশু সুরক্ষা বিল ২০২৪” পাস করা হয়, যেখানে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে, এই বিলটি এখনও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
জনগণ ও বিশেষজ্ঞদের মতামত
এই রায় নিয়ে জনসাধারণ এবং আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ মনে করেন অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল, আবার কেউ বলছেন, আইন অনুযায়ী প্রক্রিয়া মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।