দুর্গাপুর, পশ্চিমবঙ্গ:
দুর্গাপুরে এক মেডিকেল ছাত্রীর ধর্ষণকাণ্ডে উত্তাল গোটা রাজ্য। এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার থেকে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অ্যাড্ডা মোরে শুরু হয়েছে বিজেপির পাঁচ দিনের ধর্না কর্মসূচি। উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, পুরুলিয়া সাংসদ ও আসানসোল-দুর্গাপুর জেলা সভাপতি সহ অসংখ্য কর্মী-সমর্থক।
প্রথম দিন থেকেই উত্তেজনা চরমে ওঠে। বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ— পুলিশ ইচ্ছে করে মঞ্চের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় এবং তাঁরা মঞ্চ সরানোর চেষ্টা করে। এর পরেই দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।
“মমতা সরকারের আমলে মহিলারা নিরাপদ নয়”— শুভেন্দু অধিকারীর তোপ
ধর্না মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,
“আজ বাংলায় মেয়েরা নিরাপদ নয়। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, মেয়েরা রাতে বেরোবেন না— এটাই কি সমাধান? পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষ নয়, তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে কাজ করছে। এই সরকার থাকলে বাংলার বোনেরা, মেয়েরা কখনওই সুরক্ষিত নয়।”
তিনি আরও দাবি করেন, ধর্ষিত ছাত্রীর পরিবার বাধ্য হয়েছে মেয়েকে ওড়িশায় নিয়ে যেতে— যা রাজ্য সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতার প্রতীক।
ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় বাড়ছে ক্ষোভ
গত কয়েক মাস ধরে রাজ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। কলকাতা থেকে জেলা— সর্বত্রই ধর্ষণ, নিগ্রহ, হেনস্থার খবর সামনে আসছে। দুর্গাপুরের এই ঘটনাটি নতুন করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে,
“এই ধর্না চলবে যতদিন না সরকার বিচারবিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা করছে এবং অপরাধীদের কড়া শাস্তি দিচ্ছে।”
তারা আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে— প্রয়োজনে সারা রাজ্যজুড়ে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনের নীরবতা
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া আসেনি। প্রশাসনের নীরবতা আরও প্রশ্ন তুলছে— ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় সরকার কতটা কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে?
বিজেপির বক্তব্য, মমতা সরকার রাজনীতি করছে, কিন্তু ন্যায়বিচারের পথে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এখন প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে— দুর্গাপুর, আসানসোল, বর্ধমান থেকে কলকাতা পর্যন্ত বিজেপি মহিলা মোর্চা রাস্তায় নেমেছে।
শেষ কথা:
দুর্গাপুরের এই ধর্ষণকাণ্ড শুধুমাত্র একটি অপরাধ নয়— এটি বাংলার নারীর নিরাপত্তা, রাজ্য প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নকেও সামনে এনে দিয়েছে।