রাত পেরোলেই তারাপীঠে শুরু হচ্ছে বছরের অন্যতম বৃহৎ আধ্যাত্মিক উৎসব—কৌশিকী অমাবস্যা। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই হাজার হাজার ভক্ত, সাধু-সন্ন্যাসী ও তান্ত্রিক সাধক ভিড় জমাতে শুরু করেছেন মন্দির চত্বরে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভক্তের সংখ্যা পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

📿 পৌরাণিক মাহাত্ম্য
পুরাণ মতে, এই তিথিতেই দেবী তারা কৌশিকী রূপে আবির্ভূত হয়ে মহিষাসুর, কুশুম্ভ ও নিশুম্ভ দানবকে বধ করেছিলেন। পাশাপাশি, এই রাতেই তারাপীঠ মহাশ্মশানে শিমুল গাছতলায় সাধক বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তাই ভক্তদের বিশ্বাস—এই রাতে তারাপীঠে পূজা ও সাধনা করলে অশেষ পূণ্যলাভ হয়।

🛡️ কড়া নিরাপত্তা
মন্দির কমিটির তথ্য অনুযায়ী, সারা বছর যেখানে মাত্র ১০০ জন নিরাপত্তারক্ষী থাকেন, সেখানে এবার মোতায়েন হয়েছে ৩০০ জনেরও বেশি পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী। বসানো হয়েছে অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোন নজরদারি। বিশেষত পূর্বসাগর মোড়, ভিআইপি রাস্তা এবং মন্দির গর্ভগৃহের আশেপাশে নজরদারি দ্বিগুণ করা হয়েছে।

👮‍♂️ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভক্তদের মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে—সন্তানদের নিয়ে এলে বাচ্চাদের পকেটে নাম ও ঠিকানা লিখে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

🌧️ ভক্তদের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা
মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় জানান—
“বৃষ্টি হলেও যেন ভক্তদের অসুবিধা না হয়, তাই বাঁশের ব্যারিকেড, তিরপল ছাউনি, আলোকসজ্জা সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

ভোর ৪টায় দেবীর শান ও মঙ্গল আরতির পর গর্ভগৃহ খোলা হবে, তারপর শুরু হবে বিশেষ কৌশিকী পূজা। সন্ধ্যায় দেবীকে স্বর্ণালঙ্কারে রাজবেশে সাজানো হবে, যা দেখার জন্য ভক্তদের ঢল নামবে।

🏨 হোটেল ভাড়া নিয়ে কড়া নজরদারি
তারাপীঠ হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সুনীল গিরি স্পষ্ট জানিয়েছেন—
“কোনো হোটেল অতিরিক্ত ভাড়া নিতে পারবে না। নিয়ম ভাঙলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

🚑 পাশাপাশি মেডিকেল টিম, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসও সর্বক্ষণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

👉 সব মিলিয়ে কৌশিকী অমাবস্যাকে কেন্দ্র করে তারাপীঠ এখন এক অনন্য আধ্যাত্মিক ও ভক্তিময় আবহে মোড়ানো। লক্ষ লক্ষ ভক্ত নির্বিঘ্নে দেবী দর্শন করবেন—এই লক্ষ্যেই প্রশাসন, মন্দির কমিটি ও স্থানীয় সংগঠনগুলো রাতদিন এক করে প্রস্তুতি নিচ্ছে।