মুর্শিদাবাদ : পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী আজ মুর্শিদাবাদে সহিংসতা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন। কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর শুক্রবার তিনি মুর্শিদাবাদ সফর করেন এবং শনিবার জাফরাবাদে নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
শুভেন্দু অধিকারী পরিবারকে মোট ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রদত্ত ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ পরিবার প্রত্যাখ্যান করেছে। আমি প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লক্ষ এক হাজার টাকা করে দিয়েছি এবং তারা তা গ্রহণ করেছে। আমি হিন্দুদের কাছে কৃতজ্ঞ।”
তিনি আরও জানান, “পরিবারের ভবিষ্যৎ, নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচারের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।”
শুভেন্দু অধিকারী আরো দাবি করেন, “এই এলাকায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তারা ভীতসন্ত্রস্ত। তাদের দাবি, এখানে বিএসএফের স্থায়ী ক্যাম্প এবং এনআইএ তদন্ত শুরু হোক।”
মুর্শিদাবাদে সহিংসতার পটভূমি
ওয়াকফ আইন সংশোধনের প্রতিবাদে ১১ ও ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ থানার এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা হয়। দাঙ্গায় বহু বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। ওই সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয় – হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাস (পিতা-পুত্র) এবং সুতির ইজাজ আহমেদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণ এবং পুলিশের রদবদল
মুখ্যমন্ত্রী ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেও, অনেক পরিবার তা গ্রহণ করেনি। একইসঙ্গে শুক্রবার রাজ্য সরকার মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের রদবদলের নির্দেশ দেয়।
- মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন পুলিশ সুপার সূর্য প্রতাপ যাদব কে কোচবিহারের নারায়ণী ব্যাটেলিয়নের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
- জঙ্গিপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার আনন্দ রায় কে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস ৩য় ব্যাটেলিয়ন, সালুয়া-তে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আক্রান্ত এলাকায় শুভেন্দুর মানবিক উদ্যোগ
শুভেন্দু অধিকারী ধুলিয়ান পৌরসভার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিও পরিদর্শন করেন। তিনি একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরে নতুন মূর্তি দান করেন এবং অক্ষয় তৃতীয়ায় মন্দিরের পুনঃশুদ্ধিকরণের জন্য পূজার আহ্বান জানান।
তিনি বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, “আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমাদের দিনও আসবে।”
