রানিগঞ্জে নিরাপত্তার যুগান্তকারী পদক্ষেপ, শহরজুড়ে বসলো ১৩০টি সিসিটিভি ক্যামেরা

single balaji

রানিগঞ্জ:
ঐতিহ্য, বাণিজ্য ও শিক্ষার শহর রানিগঞ্জ এবার ঢুকে পড়ল আধুনিক ডিজিটাল নিরাপত্তার আওতায়। শহরের প্রতিটি অলিগলি, গুরুত্বপূর্ণ মোড়, বাজার ও জনবহুল এলাকা এখন সিসিটিভি ক্যামেরার তীক্ষ্ণ নজরে। এর ফলে অপরাধীদের আর লুকিয়ে থাকার কোনও সুযোগ থাকছে না।

রানিগঞ্জ শহরজুড়ে মোট ১৩০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি ক্যামেরা স্থাপন করেছে পুলিশ প্রশাসন, আর বাকি ৭০টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে রানিগঞ্জ বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন তহবিল থেকে, যার জন্য ব্যয় হয়েছে প্রায় 15 লক্ষ টাকা

এই সিসিটিভি ব্যবস্থার জন্য রানিগঞ্জ থানার মধ্যেই চালু করা হয়েছে একটি আধুনিক কন্ট্রোল রুম। পাশাপাশি, সারাক্ষণ নজরদারির জন্য একটি বিশেষ মনিটরিং টিমও গঠন করা হয়েছে, যারা ২৪ ঘণ্টা ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করবে।

সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেটে ও ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এই সিসিটিভি ব্যবস্থার উদ্বোধন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী, রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস। পরে পুলিশ কমিশনার ও বিধায়ক একসঙ্গে কন্ট্রোল রুম পরিদর্শন করেন।

পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী বলেন,
“রানিগঞ্জ শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে সিসিটিভি ক্যামেরা বড় ভূমিকা নেবে। কোনও অপরাধ ঘটলে দ্রুত সূত্র পাওয়া যাবে। বিশেষ করে নারী নিরাপত্তার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে।”

অন্যদিকে বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,
“শহরজুড়ে ডিজিটাল নজরদারি চালুর প্রস্তাব পাওয়ার পর আমি বিষয়টি রাজ্যস্তরে উত্থাপন করি। তার ফলেই বিধায়ক তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ হয় এবং প্রথম ধাপে ৭০টি ক্যামেরা বসানো সম্ভব হয়েছে।”

🔍 বাস্তব উদাহরণে সিসিটিভির গুরুত্ব বোঝাল পুলিশ

অনুষ্ঠান চলাকালীন রানিগঞ্জ থানার ওসি বিকাশ দত্ত বিধায়ককে একটি বাস্তব ঘটনার মাধ্যমে সিসিটিভির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান,
দুই মাস আগে হওয়া একটি চুরির মামলায় অভিযুক্তরা ধরা পড়ছিল না। পুলিশ কমিশনার বারবার রিপোর্ট চাইছিলেন। পরে সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে অবশেষে অশোকনগর এলাকা থেকে চোর ও চোরাই মাল নেওয়া ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়

🏙️ কেন রানিগঞ্জে এই নজরদারি অত্যন্ত জরুরি?

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, রানিগঞ্জে রয়েছে—

  • অসংখ্য স্কুল
  • দুটি নামী কলেজ
  • বহু হাসপাতাল ও নার্সিংহোম
  • অসংখ্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
  • দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র
  • তিন ডজনেরও বেশি গয়নার দোকান
  • প্রতিটি বড় ব্যাঙ্কের শাখা
  • শপিং মল, সিনেমা হল, মন্দির, হোটেল ও রেস্তোরাঁ

প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও পড়ুয়া এই শহরে যাতায়াত করেন। ফলে দিনের বেশিরভাগ সময়ই শহর থাকে জনসমুদ্রে পরিণত। অতীতে রানিগঞ্জে দিনের বেলায় অপরাধের ঘটনাও কম নয়। তাই দীর্ঘদিন ধরেই শহরের নিরাপত্তা জোরদারের দাবি উঠছিল।

সিসিটিভি ব্যবস্থা চালু হওয়ায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসবে, অপরাধী শনাক্ত করা সহজ হবে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতি আরও দৃঢ় হবে—এমনটাই আশা করছেন শহরবাসী।

ghanty

Leave a comment