পুরী: শ্রীজগন্নাথ মন্দির, পুরীর প্রবীণ সেবায়েত রামকৃষ্ণ দাস মহাপাত্রকে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠার সময় বিতর্কিত মন্তব্য করায় ৩০ দিনের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি দাবি করেন দীঘা মন্দিরে ব্যবহৃত ‘দারু’ (পবিত্র কাঠ) ছিল পুরীর নবকলেবর উৎসবের অতিরিক্ত কাঠ!
ওড়িশা সরকার ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও সরকার জানিয়েছে দীঘায় কোনো ‘অবশিষ্ট কাঠ’ ব্যবহৃত হয়নি, তবুও মহাপাত্রের বক্তব্য ‘পুরীর ঐতিহ্য ও পবিত্রতা’-কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
একটি বাংলা টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে মহাপাত্র বলেন, “দীঘার কাঠ নবকালেবর থেকেই এসেছে।” পরে অবশ্য তিনি দাবি করেন এটি ছিল ‘জিভের ফসকানো কথা’।
⛔ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ:
- শ্রীজগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের নির্দেশে তিনি এখন মন্দিরে প্রবেশ বা কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
- সতর্ক করা হয়েছে: অন্য সেবায়েতদের প্রভাবিত করলে বা ধর্মীয় পরিবেশ নষ্ট করলে আরো কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
📛 ‘জগন্নাথ ধাম’ নাম ঘিরে বিতর্ক:
ওড়িশা সরকার কড়া সুরে জানিয়েছে, দীঘা মন্দিরে ‘জগন্নাথ ধাম’ নাম ব্যবহার করা চলবে না।
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মজিহি এক চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছেন, যেন দীঘা মন্দিরের নাম থেকে ‘ধাম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়।
চিঠিতে তিনি লেখেন:
“পুরীর শ্রীজগন্নাথ ধাম হিন্দু ধর্মের চতুর্ধাম-এর অন্যতম। তার পবিত্রতা, আধ্যাত্মিকতা ও সাংস্কৃতিক পরিচয় অমোঘ ও অতুলনীয়। অন্যত্র একই নাম ব্যবহার বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।”
🏰 পুরীর গজপতি মহারাজ ও ISKCON এর হস্তক্ষেপ দাবি:
পুরীর গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেবও ইস্কনের (ISKCON) কাছে আবেদন করেছেন, যাতে দীঘা মন্দির থেকে ‘জগন্নাথ ধাম’ নামটি প্রত্যাহার করা হয়।
🧭 অতিরিক্ত তথ্য:
- নবকালেবর: এটি প্রতি ১২-১৯ বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়, যখন পুরীর মূর্তিগুলিকে নতুন কাঠে প্রতিস্থাপন করা হয়।
- দারু: পুরাণ অনুযায়ী, শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পবিত্র চিহ্নযুক্ত কাঠই নবকালেবরের জন্য ব্যবহৃত হয়।
এই বিতর্ক ধর্মীয় পরিবেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্বার্থে এই ইস্যুকে ঘোলা জলে মাছ ধরার মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, দীঘার মন্দির কর্তৃপক্ষ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই নাম বিতর্কে কী অবস্থান নেন।












