আসানসোল:
আসানসোল জেলা হাসপাতালে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। চিকিৎসাধীন এক রোগী হঠাৎ করেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছেন। এই ঘটনার পর হাসপাতাল চত্বরে আতঙ্ক এবং ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবার এখন দিশেহারা, আর অভিযোগের তির সোজা হাসপাতাল প্রশাসনের দিকে।
🔹 চিকিৎসার জন্য ভর্তি, পরের দিনই নেই রোগী!
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চিচুরিয়া ডাঙালপাড়া এলাকার বাসিন্দা সমর মুর্মু-কে ৩ অক্টোবর (শুক্রবার) চিকিৎসার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার সঙ্গে ছিলেন এক আত্মীয়, রমেশ হেমব্রম।
পরের দিন দুপুরে রমেশ খাবার খেতে সামান্য সময়ের জন্য হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যায় যখন সমরের পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে পৌঁছন, তখন তাঁরা দেখতে পান— সমর নিজের বিছানায় নেই!
নার্স ও চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসা করলে কেউই সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। পরে পরিবার হাসপাতালের প্রতিটি কোণা এবং আশপাশে খুঁজে দেখলেও কোনও সন্ধান মেলেনি। শেষমেশ রাতেই আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
🔹 “সিসিটিভি আছে, গার্ড আছে— তবুও রোগী উধাও?”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিচুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ধনঞ্জয় গোপ। তিনি বলেন,
“যখন হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা আর নিরাপত্তারক্ষী সবই আছে, তখন একজন রোগী কীভাবে উধাও হয়ে যায়? এটা অত্যন্ত সন্দেহজনক এবং প্রশাসনের গাফিলতির প্রমাণ।”
তিনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে রোগীকে দ্রুত খুঁজে বের করার দাবি জানান।
🔹 আদিবাসী যুব সংঘের হুঁশিয়ারি: ‘পাঁচ দিনের মধ্যে না পেলে আন্দোলন’
আদিবাসী যুব সংঘের সভাপতি বাবু উজ্জ্বল জানান,
“যদি আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে রোগীর খোঁজ না পাওয়া যায়, তবে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই এই ঘটনার জন্য দায়ী।”
🔹 হাসপাতাল সূত্রে দাবি: তদন্ত চলছে
অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন,
“আমরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যত দ্রুত সম্ভব নিখোঁজ রোগীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।”
🔹 স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক
এই ঘটনার পর থেকেই আসানসোল জেলা হাসপাতালের অন্যান্য রোগী ও তাঁদের পরিজনের মধ্যে চরম ভয় ও ক্ষোভের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন —
“যদি হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাই নিরাপদ না হন, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?”
⚠️ প্রশাসনের নীরবতা আরও সন্দেহজনক
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নীরবতা এবং ধীর তদন্ত প্রক্রিয়া ঘটনাকে আরও রহস্যময় করে তুলছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি নিছক নিখোঁজ নয়, বরং হাসপাতালের সিকিউরিটি সিস্টেমের ভয়াবহ ব্যর্থতা।