পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক এস. পোন্নাবলম শুক্রবার আসানসোলের জেলাশাসক কার্যালয়ে রাজ্য সরকারের বহুল আলোচিত ‘পথশ্রী’ প্রকল্প নিয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি জানান, চলতি অর্থবর্ষে রাজ্য সরকার পথশ্রী প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায় শুরু করেছে, যা এই প্রকল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।
জেলাশাসক জানান, এর আগে পথশ্রী প্রকল্পের আওতায় শুধুমাত্র গ্রামীণ এলাকার রাস্তা নির্মাণ ও মেরামত করা হতো। কিন্তু এবার চতুর্থ পর্যায়ে প্রথমবারের মতো শহরাঞ্চলের রাস্তাকেও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে গ্রাম ও শহর—উভয় ক্ষেত্রেই উন্নত পরিকাঠামোর সুবিধা মিলবে।
তিনি আরও বলেন, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় গ্রামীণ এলাকায় মোট ১৬৫টি রাস্তার কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। যাচাই-বাছাইয়ের পর জেলা প্রশাসনের তরফে ১৬০টি রাস্তার কাজের প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়, যার অনুমোদন ইতিমধ্যেই মিলেছে। এই রাস্তার মোট দৈর্ঘ্য ১৭৬.৫ কিলোমিটার এবং এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮৮ কোটি টাকা।
জেলাশাসক জানান, প্রস্তাবিত কাজগুলির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং এর মধ্যে ১০৮টি রাস্তার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। বাকি কাজগুলিও ধাপে ধাপে শুরু হবে।
শহরাঞ্চলের রাস্তা সংস্কারের কাজ মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেট (এমইডি)-এর মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
- আসানসোল পুরনিগম এলাকায় মোট ২৫০টি রাস্তার কাজ হবে, যার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ কিলোমিটার।
- দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকায় মোট ১১০টি রাস্তার কাজ হবে, যার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ কিলোমিটার।
এই দুই পুর এলাকায় রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারে মোট ব্যয় হবে আনুমানিক ১২০ কোটি টাকা।
সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক আরও জানান, এদিন তিনি আসানসোল পুরনিগমে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ প্রকল্প সংক্রান্ত একটি বৈঠকও করেন। সেই বৈঠকে তিনি পুরনিগমের আধিকারিকদের জানিয়েছেন যে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, পথশ্রী প্রকল্প এবং আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান—এই দুই প্রকল্পে কাজের জন্য অর্থের কোনও অভাব হবে না। রাজ্য সরকার মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতকে আরও সহজ ও নিরাপদ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
জেলা প্রশাসনের মতে, এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হলে পশ্চিম বর্ধমান জেলার গ্রাম ও শহরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটবে এবং সাধারণ মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন।











