আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান:
পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা এলাকার জেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা অনুপ দাস প্রায় দশ বছর ধরে কিডনির গুরুতর অসুখে ভুগছেন। ডায়ালিসিসের উপর নির্ভর করেই তাঁর দিন কাটছে। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার খরচ তিনিই একা বহন করে আসছিলেন। সংসারে মা, স্ত্রী বা সন্তান কেউ পাশে নেই। আর্থিক সংকট ও একাকীত্ব তাঁকে ধীরে ধীরে চরম হতাশার দিকে ঠেলে দেয়। অবশেষে মানসিক চাপে অনুপ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে গতকাল। ফাঁস লাগিয়ে জীবন শেষ করার ঠিক মুহূর্তে তাঁর স্ত্রী ও মা ঘটনাটি দেখতে পান। তাঁদের চিৎকারে গ্রামবাসীরা ছুটে আসেন এবং সঙ্গে সঙ্গে খবর পৌঁছে যায় স্থানীয় বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কাছে।
সংবাদ পেয়ে বিধায়ক নরেন দা দ্রুত অনুপ দাসের বাড়িতে উপস্থিত হন। সেখানে তিনি অবিলম্বে ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা করেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন— অনুপের সমস্ত চিকিৎসার খরচ তিনি নিজে বহন করবেন।
অনুপের স্ত্রী নিবেদিতা দাস আবেগঘন কণ্ঠে বলেন –
👉 “আমার স্বামীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছেন নরেন দা। আমাদের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে কোনো উপায় ছিল না। আজ তিনি না থাকলে আমার স্বামী বেঁচে ফিরতেন না। আমাদের কাছে তিনি ঈশ্বরের মতো।”
বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন –
👉 “এটা আমার দায়িত্ব। যদি আমাকে আগে জানানো হত, আমি আরও আগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতাম। কোনো মানুষ যেন অর্থাভাব বা একাকীত্বের কারণে আত্মঘাতী না হন— সেটাই আমার লক্ষ্য।”
গ্রামবাসীরাও বিধায়কের এই মানবিক পদক্ষেপের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অনুপের জীবনরক্ষা শুধু একটি পরিবার নয়, পুরো গ্রামকে আশার আলো দেখিয়েছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল, রাজনীতি ছাড়াও মানবিকতার জায়গায় দাঁড়িয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আসল কর্তব্য।