রবিবার সকালেই উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার শহরে অবস্থিত প্রসিদ্ধ মনসা দেবী মন্দিরে ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মন্দির চত্বরে হঠাৎ ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারালেন ৬ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে স্থানীয় পুলিশ, UKSDRF ও প্রশাসনিক দল। শুরু হয় উদ্ধারকাজ।
কি কারণে ঘটল এই ট্র্যাজেডি?
প্রথমে শোনা যায়, মন্দিরের সিঁড়ির ধারে কোনও একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে হঠাৎ শর্টসার্কিট হয় এবং গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে ‘কারেন্ট ছড়াচ্ছে’। এই গুজব মুহূর্তের মধ্যে ভয়ে ছড়িয়ে পড়ে ভক্তদের মধ্যে, ফলে জনস্রোত হুড়োহুড়ি শুরু করে। তাতেই পদদলিত হয়ে অনেকে গুরুতর আহত হন।
তবে প্রশাসনের ভিন্ন দাবি—
গঢ়বাল ডিভিশনের কমিশনার বিনয় শঙ্কর পাণ্ডে সংবাদসংস্থা ANI-কে বলেন, “পদদলিত হয়ে ৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যে ঘটনাটি সিঁড়ির রাস্তায় ঘটেছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কোনও বিষয় ঘটেনি, এটি নিছক গুজব ছিল।” তবে তদন্ত চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে—
সকাল ৯টার দিকে কন্ট্রোল রুমে খবর আসে যে মন্দিরের প্রধান রাস্তায় ভিড়ের মধ্যে অনেকে পড়ে গেছেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের দল পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রায় ৩৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়, যাদের মধ্যে ৬ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
চোখে দেখা বিভীষিকা—প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “একটা খুঁটিতে শর্টসার্কিট হয়েছিল। এরপর হঠাৎ লোকজন বলতে শুরু করে ‘কারেন্ট লাগছে!’ সঙ্গে সঙ্গেই সবাই দৌড়াতে শুরু করে… চারপাশে শুধু চিৎকার আর কান্নার শব্দ।”
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া:
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এক্স-এ লিখেছেন—
“মনসা দেবী মন্দিরে পদদলনের হৃদয়বিদারক সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। উদ্ধারকাজ চলছে, আমি নিজে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। মা মনসা রানির কাছে প্রার্থনা, সকল ভক্ত সুস্থ থাকুন।”
সাময়িক আতঙ্কের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে:
বর্তমানে মন্দির এলাকা শান্ত। পুলিশ বাহিনী উপস্থিত রয়েছে যাতে নতুন করে আর কোনও বিশৃঙ্খলা না ঘটে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে।
এটি শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি শিক্ষা— যেখানে গুজবের বিরুদ্ধে সচেতনতা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার প্রয়োজনীয়তা ফের একবার প্রমাণিত হল।