কলকাতা: রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি-তে বড়সড় রদবদলের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (STF) এবং “অ্যান্টি-করাপশন ব্যুরো”-কে আরও শক্তিশালী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে আলু এবং পেঁয়াজের বাড়তি দাম নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা জানাতে গিয়ে, রাজ্যের কিছু নিম্নস্তরের পুলিশ ও সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে “অবহেলা ও দুর্নীতি”-র অভিযোগ তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বালি এবং কয়লা পাচারের সঙ্গে যুক্ত যেই হোক না কেন, রাজনৈতিক রং না দেখে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বালি-কয়লা পাচারের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা
পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল-রানিগঞ্জ এলাকায় কয়লা এবং নদী থেকে বালি চুরির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিরোধীরা বারবার শাসকদলকে আক্রমণ করেছে এই ইস্যুতে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, “তোলাবাজি বা বেআইনি ব্যবসা মেনে নেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, কিছু নিম্নস্তরের পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর (CISF) সদস্যরাও এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “বিরোধী দলের কেউ যদি যুক্ত থাকে, তাকে গ্রেপ্তার করুন। জেলে পাঠান। আইনানুগ ব্যবস্থা নিন।”
সতর্কতা ও নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, রাজ্যে বাইরে থেকে অস্ত্র আসছে। এটি বন্ধ করতে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। রাজ্যের প্রতিটি জেলাসীমানা এবং আন্তঃরাজ্য সীমান্তে “নাকা চেকিং” বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি শপিং মলগুলিকেও সতর্ক করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্যের কিছু শপিং মলে অপরাধীচক্র আশ্রয় নিচ্ছে এবং সেগুলি ভুয়ো মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্র হতে পারে। তিনি বলেন, “ভুয়ো মুদ্রা কীভাবে রাজ্যে ঢুকছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।”
রাজনৈতিক তোলপাড়
বিরোধী শিবির এই ঘোষণাগুলিকে রাজনৈতিক চমক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, “আমার সরকার কারও পক্ষ নেবে না। যদি প্রয়োজন হয়, জনগণের কাছ থেকে সাহায্য নেব, কিন্তু বেআইনি ব্যবসার সঙ্গে আপস করব না।”