আসানসোল: বারাবনি থানার ইনচার্জ মনোরঞ্জন মণ্ডলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট (এডিপিসি) একটি আদেশ জারি করে জানিয়েছে যে, “অপেশাদার আচরণ ও দায়িত্বে গাফিলতি”-র জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। সাসপেনশনের সময় তিনি বেতনের অর্ধেক পাবেন।
সাসপেনশনের কারণ
বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ কমিশনার মনোরঞ্জন মণ্ডলের সাসপেনশনের আদেশ জারি করেন। আদেশে বলা হয়েছে, ১৯৪৩ সালের পিআরবি পার্ট-১-এর নিয়ম ৮৮০/৮৮১ এবং ডাব্লুবিএসআর পার্ট-১-এর নিয়ম ৭১ অনুযায়ী, বারাবনি থানার ইনচার্জ সাব-ইন্সপেক্টর মনোরঞ্জন মণ্ডলকে ২১ নভেম্বর ২০২৪ থেকে সাসপেন্ড করা হয়।
অবৈধ বালু ও কয়লা ব্যবসার বিরুদ্ধে মমতার ক্ষোভ
বৃহস্পতিবার নবান্নে এক প্রেস কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পাঞ্চলে অবৈধ বালু ও কয়লা ব্যবসা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, আরও এক-দুজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
মনোরঞ্জন মণ্ডলের বিতর্কিত ইতিহাস
কনস্টেবল থেকে সাব-ইন্সপেক্টর পদে উন্নীত মনোরঞ্জন মণ্ডল এডিপিসি-র প্রায় সব বড় থানার ইনচার্জ ছিলেন। বারাবনি থানা, যাকে অবৈধ কয়লা ব্যবসার “স্বর্গরাজ্য” বলা হয়, সেখানে তাঁর সময়কাল অত্যন্ত বিতর্কিত ছিল।
কিছুদিন আগে বারাবনি থানা এলাকায় একটি ইসিএল কয়লা খনিতে অবৈধ খনন চলাকালীন দু’জন যুবকের মৃত্যু হয়। ঘটনাটির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এই ঘটনায় বিজেপি প্রতিবাদ জানায় এবং এটি ব্যাপক চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে। এছাড়া, বারাবনি থানায় তৃণমূল ব্লক সভাপতির জন্মদিন পালন করার সময় মনোরঞ্জন মণ্ডলের ছবি ভাইরাল হয়।
রাজনৈতিক তোলপাড়
সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ বানশগোপাল চৌধুরী সম্প্রতি তাঁর এক বক্তব্যে মনোরঞ্জন মণ্ডলের বিরুদ্ধে “কয়লা চুরি”-তে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন। বিজেপি অভিযোগ করেছে, পুলিশের কর্মকাণ্ড মুখ্যমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে চলছে।
ভবিষ্যতে আরও ব্যবস্থা হতে পারে
পুলিশ বিভাগে এই পদক্ষেপ বড়সড় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মনে করা হচ্ছে, মমতার নির্দেশে আরও কয়েকজন কর্মকর্তার উপর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।