কুলটি (আসানসোল):
আসানসোলের কুলটি বিধানসভা এলাকার লখিয়াবাদ অপরপাড়া ওয়ার্ড নম্বর ৬৭-এ মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু হয় চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
স্থানীয় তৃণমূলের প্রাক্তন বোড়ো চেয়ারপার্সন বেবি বাউরির বাড়ির দরজার সামনের সিঁড়িতে এক কোটি টাকার লটারি বিজেতা কার্তিক বাউরিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পরিবারের লোকেরা তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপরই মৃত কার্তিক বাউরির পরিবার বেবি বাউরি, অমরদীপ বাউরি, সন্দীপ বাউরি ও জ্যোৎস্না বাউরির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তোলে।
পরিবারের তরফে বড়পুকুর বারাকার ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগে কার্তিকের মা সবিতা বাউরি লিখেছেন, ঘটনার দিন অমরদীপ বাউরি তাঁর ছেলেকে নিজের বাড়িতে ডেকেছিল।
দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও যখন সে ফেরেনি, তখন তিনি ছেলেকে আনতে গিয়েছিলেন অমরদীপের বাড়িতে।
“আমি ওখানে গিয়ে ছেলের চিৎকার শুনি। ছুটে যেতেই দেখি বাড়ির দরজার সামনেই রক্তে ভেজা অবস্থায় পড়ে আছে কার্তিক,” — বলেন সবিতা বাউরি।
খবর ছড়াতেই স্থানীয় শতাধিক মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমান।
বেবি বাউরি দাবি করেন,
“কার্তিক চুরির উদ্দেশ্যে আমার বাড়িতে ঢুকেছিল। ধরা পড়ে যাওয়ায় পালাতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে যায়। এর বেশি আমি কিছুই জানি না।”
তবে মৃতের মা বলেন,
“আমার ছেলে পাঁচ মাস আগেই এক কোটি টাকার লটারি জিতেছিল। তার চুরির প্রয়োজন নেই। ওকে খুন করা হয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লটারি জেতার পর থেকেই কার্তিককে নিয়ে এলাকায় হিংসা ও বিরোধ বাড়ছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, লটারি টাকার ভাগাভাগি নিয়েই ঘটেছে এই হত্যাকাণ্ড।
বারাকার থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই বেবি বাউরি ও অমরদীপ বাউরিকে গ্রেফতার করেছে।
অন্য দুই অভিযুক্ত — সন্দীপ বাউরি ও জ্যোৎস্না বাউরি এখনও পলাতক।
পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনেরই খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চলছে এবং খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।
ধৃত দুই অভিযুক্তকে আসানসোল আদালতে তোলা হয়েছে।
পুলিশ এখন ঘটনাটিকে ‘লটারি মানি মার্ডার কেস’ হিসেবে দেখছে।
স্থানীয় মানুষদের দাবি, ‘‘এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে আরও বড় চক্রান্ত লুকিয়ে আছে, যা পুলিশের তদন্তেই ধরা পড়বে।’’

















