পশ্চিমবঙ্গের বারুইপুর পকসো আদালত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর, ২০২৪) দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে ১০ বছর বয়সী নাবালিকার ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মোষতাকিন সরদারকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছে। অপরাধের মাত্র ৬২ দিনের মধ্যে এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
মোষতাকিন সরদারকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর ধারা ১০৩ (খুন), ৬৫ (ধর্ষণ), ৬৬ (মৃত্যু ঘটানো বা শারীরিক অক্ষমতার কারণ) এবং পকসো আইনের বিভিন্ন ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
মামলার দ্রুত বিচার
১০ বছর বয়সী মেয়েটির মরদেহ ৪ অক্টোবর উদ্ধার করা হয়। ৩০ অক্টোবর চার্জশিট জমা দেওয়া হয় এবং মাত্র ৬২ দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিচার ব্যবস্থার এই দ্রুততার প্রশংসা করে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে এ ধরনের দ্রুত বিচার নজিরবিহীন। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সমস্ত ব্যক্তিদের অসাধারণ কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সরকার নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা বজায় রাখে।”
আন্দোলন এবং প্রতিবাদ
কুলতলিতে এই বর্বরোচিত ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে কুলতলির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক গণেশ মণ্ডল এলাকা ছাড়েন। এক পুলিশ পোস্টে ভাঙচুর করা হয়।
অভিযোগ ওঠে, প্রথমে পুলিশ ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে নেয়নি এবং নিখোঁজ ডায়েরি করতে অস্বীকার করে।
আরজি কর এবং নতুন আইন
দুই মাস আগে আরজি কর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। সেই সময়ের আন্দোলনের জেরে সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু আইন’ পাস করা হয়। এই আইন অনুযায়ী ধর্ষণে মৃত্যুর ঘটনা বা ভিকটিমকে অক্ষম করে ফেলার ক্ষেত্রে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
আরজি কর মামলার প্রভাব
কুলতলি কেসের রায়ের মধ্যেও আরজি কর মামলার ভুক্তভোগী পরিবার এখনও ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়।
কুলতলির বিশেষ প্রভাব
এই রায় পশ্চিমবঙ্গে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আইন ও বিচার ব্যবস্থার এই দ্রুততার নজির গোটা দেশজুড়ে আলোড়ন ফেলেছে।