🗓️ কালীগঞ্জ: নদিয়া, ১৭ জুন
নদিয়ার কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন ঘিরে চরম উত্তেজনা। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস যেমন জয়ের বিষয়ে ‘নিশ্চিন্ত’, তেমনই বিজেপি জিতুক বা না জিতুক, এই ভোটে হিন্দু ভোটের বৃহৎ মেরুকরণের লক্ষ্যেই নেমেছে জোরকদমে। অপরদিকে, একদা শক্ত ঘাঁটি ছিল যে আসন কংগ্রেস-বামেদের, সেখানেই এবার প্রাপ্তি খুঁজছে তারা—রাজনৈতিক মেরুকরণে ফাটল ধরানোর আশায়।
🔷 তৃণমূল আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর, বিজেপির নিশানা গেরুয়া ঐক্য
প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের কন্যা আলিফা আহমেদকে প্রার্থী করে এক ঝকঝকে, শিক্ষিত মুখ তুলে ধরেছে তৃণমূল। রাজ্য নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, “বিপুল ব্যবধানেই জিতব”, এমনকি কেউ কেউ দাবি করছেন, ব্যবধান হবে ৫০ হাজারেরও বেশি।
অন্যদিকে বিজেপির দাবি—৮০% হিন্দু ভোট পেয়েছিল তারা, এবার সেটা ৯০% হবে। যদিও কালীগঞ্জে তাদের কখনো জয় হয়নি, তবুও এই উপনির্বাচন ‘ভিন্ন প্রাপ্তির’ লক্ষ্যে ব্যবহার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। দলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, “এটা সরকার গঠনের ভোট নয়, হিন্দু ভোটকে ঐক্যবদ্ধ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
🔶 কংগ্রেস-বামদের ইতিহাস উজ্জ্বল, বর্তমান অস্তিত্ব সংকটে
৭৪ বছরের মধ্যে ৪৪ বছর কালীগঞ্জ ছিল কংগ্রেসের দখলে। তবু আজ তারা সন্দিহান—জামানতই বা থাকবে তো? অধীর চৌধুরীর স্পষ্ট স্বীকারোক্তি: “বিভাজনের রাজনীতিতে ভোটারদের একটা বড় অংশ তৃণমূল ও বিজেপির দিকে চলে গিয়েছে।”
সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক সুমিত দে’র আশা, “বিজেপি-তৃণমূলের দ্বিমেরু রাজনীতি ভাঙতে পারলেই সেটাই আমাদের আসল প্রাপ্তি হবে।”
📊 চোখ রাখুন এই সংখ্যাগুলির উপর
- মোট ভোটার: প্রায় আড়াই লক্ষ
- ২০২১ তৃণমূল প্রাপ্ত ভোট: ১.১২ লক্ষ
- বিজেপি: ৬৫ হাজার
- কংগ্রেস: ২৫ হাজার (তবু জয়ের অঙ্কে যথেষ্ট নয়)
🔚 উপসংহার:
এই উপনির্বাচন কোনও নিরীহ ভোটযুদ্ধ নয়, বরং এটি নদিয়ার মাটিতে ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগাম মহড়া। একদিকে জনসংযোগে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল, অন্যদিকে ধর্মভিত্তিক ভোট কৌশলে সক্রিয় বিজেপি। আর ইতিহাসের গর্ব নিয়ে মুখ তুলে দাঁড়াতে চাইছে কংগ্রেস-বাম জোট। কে বাজিমাত করবে, তার উত্তর মিলবে ভোটের বাক্স খুললেই।