জামুরিয়া বাজারে অবস্থিত প্রধান ডাকঘর — যা একদিকে যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্র, তেমনি একটি প্রভাবশালী শিল্প গোষ্ঠীর পরিষেবার ক্ষেত্রও — সেখানে টানা ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে ব্যাংকিং সংক্রান্ত কাজকর্ম কার্যত বন্ধ। টাকা জমা, উত্তোলন বা অন্যান্য ন্যূনতম আর্থিক পরিষেবার জন্য এলেও, গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।
ডাকঘরের পোস্টমাস্টার শ্রী রাকেশ সিনহা দাবি করেছেন যে, “লিংক ফেলের কারণে বর্তমানে কোনো কাজ সম্ভব নয়,” এবং এই বিষয়ে আসানসোল প্রধান ডাকঘরের সুপারিন্টেনডেন্টকে অবহিত করা হয়েছে।
তবে বাস্তব পরিস্থিতি আরো জটিল। স্থানীয় বাসিন্দা ও গ্রাহক মনোজ সিং জানিয়েছেন, “আমি প্রায় ১০ দিন ধরে এই ডাকঘরের চক্কর কাটছি, কিন্তু কোনো কাজই হচ্ছে না।”
এই প্রসঙ্গে জামুরিয়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সম্পাদক মহেশ সাওদিয়া জানিয়েছেন যে, আসানসোল প্রধান ডাকঘরের সুপারিন্টেনডেন্ট শ্রী অবিনাশ ভেদান্তিকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিএসএনএলের ‘কারিগরি সমস্যা’র দোহাই দেন।
কিন্তু চমক এখানেই — জামুরিয়া বিএসএনএল-এর প্রধান কারিগরি আধিকারিক নিশ্চিত করেছেন, “আমাদের টিম ইতিমধ্যেই মেশিন পরীক্ষা করেছে। সমস্যার উৎস বিএসএনএলের নয়, বরং ডাকঘরের নিজস্ব ‘কনফিগারেশন সুইচ ও যন্ত্রের’ ত্রুটির জন্যই এই বিপর্যয়।” এই তথ্য পুনরায় সুপারিন্টেনডেন্টকে জানানো হয়েছে এবং তিনি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
🏢 আধার অফিসের সমস্যাও প্রকাশ্যে
ডাকঘরের মধ্যেই থাকা আধার পরিষেবা কেন্দ্র নিয়েও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পোস্টমাস্টার জানিয়েছেন, জায়গার সমস্যার কারণে এই সেবা বর্তমানে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং নতুন ভবনে স্থানান্তরের পরেই এই সমস্যা মিটবে।
⚠️ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও দায়বদ্ধতা:
এই ঘটনা শুধু প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা নয়, বরং এর পেছনে আছে প্রশাসনিক শৈথিল্য এবং সমন্বয়ের অভাব। একদিকে যেখানে বিএসএনএল দায় অস্বীকার করছে, অন্যদিকে ডাকঘরের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রের ত্রুটি জনজীবনে প্রতিদিন দুর্ভোগ ডেকে আনছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল এবং সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে এখন ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। ডাকঘরের মত একটি মৌলিক পরিষেবা কেন্দ্রে এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদী প্রযুক্তিগত বিভ্রাট একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।