জামুরিয়া: তিন নাবালিকা ও দুই নাবালক নিখোঁজ হয়ে পড়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে চাঞ্চল্য ছড়ায় জামুরিয়ার গিরমিট নম্বর ১০ এলাকায়। ৯ তারিখ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে তিন নাবালিকা স্কুলে পরীক্ষা দিতে বের হলেও সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন পরিবারগুলি খোঁজ করতে শুরু করে। দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পরও কোনও খোঁজ না মেলায় পরিবারগুলি শ্রীরপুর ফাঁড়িতে নিখোঁজ ডায়েরি করে।
পরে জানা যায়, একই এলাকা থেকে দুই নাবালকও রহস্যজনকভাবে উধাও হয়েছে। নিখোঁজ তিন নাবালিকা হল—
- তারুম খাতুন (১৫), পিতা তাহির আনসারি
- রাধা নোনিয়া (১৫), পিতা হরি নোনিয়া
- প্রতিজ্ঞা নোনিয়া (১৫), পিতা শিবশঙ্কর নোনিয়া
নিখোঁজ দুই নাবালক হল—
- ওয়াসিদ আনসারি (১৬), পিতা তাহির আনসারি
- ওয়াকিদ আনসারি (১৫), পিতা ওয়াজিদ আনসারি
নিখোঁজ পাঁচ কিশোর-কিশোরীর বয়স ১৫-১৬ বছর হওয়ায় ঘটনাটি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে।
এরপর শ্রীরপুর ফাঁড়ির পুলিশ তদন্তে নামে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ধানবাদ স্টেশনে পাঁচ জনকেই আটক করে পুলিশ। জানা যায়, তারা সবাই গুজরাটে কাজ করতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছেড়েছিল। পরিবারের অজান্তে আগে থেকেই গুজরাটে কাজ করা এক নাবালক অন্যদেরও নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।
তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী—
মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে সবাই একসঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়। প্রথমে তারা আসানসোল স্টেশনে পৌঁছায়। সেখান থেকে ট্রেনে জেসিডি স্টেশন, এবং পরে অন্য একটি ট্রেনে ধানবাদ স্টেশনে যায়। মঙ্গলবার রাতভর তারা ধানবাদ স্টেশনেই অপেক্ষা করছিল গুজরাটগামী ট্রেন ধরার জন্য।
পরদিন বুধবার ভোরে শ্রীরপুর ফাঁড়ির পুলিশ ধানবাদ স্টেশনে পৌঁছেই পাঁচ জনকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। দীর্ঘ জেরা শেষে তারা পুরো ঘটনাটি স্বীকার করে।
পরে পুলিশ সকল নাবালক-নাবালিকাকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়। সন্তানদের সুস্থভাবে ফিরে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা শ্রীরপুর ফাঁড়ির পুলিশকে ধন্যবাদ জানায়।
স্থানীয়দের মতে, এলাকায় দালালচক্রের সক্রিয়তা বাড়ায় এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে। নাবালকদের শ্রমিক হিসেবে গুজরাট বা অন্যান্য রাজ্যে পাঠানোর চেষ্টা বহুদিন ধরেই চলছে। এই ঘটনার পর স্থানীয়রা পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর দাবি তুলেছেন।












