জয়পুরে মৃত্যু ডাম্পার! বেপরোয়া গতির তাণ্ডবে ১৯ জনের প্রাণ গেল, দমে উঠল শহর

unitel
single balaji

জয়পুর, ৩ নভেম্বর ২০২৫:
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর সোমবার দুপুরে এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল। শহরের হারমাড়া এলাকায় একটি বেপরোয়া গতির ডাম্পার ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একের পর এক গাড়িকে পিষে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে রাস্তাজুড়ে চিৎকার, রক্ত আর ধ্বংসস্তূপের দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে।

এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে, এবং ডজনখানেকেরও বেশি মানুষ গুরুতর আহত। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। তাঁদের কানওয়াটিয়া, সি.কে.এস. ও এস.এম.এস. হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, ডাম্পার চালক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। তিনি প্রথমে এক বাইক আরোহীকে ধাক্কা দেন, তারপর রাস্তার পাশে দাঁড়ানো গাড়ি ও পথচারীদের ওপর উঠে যান। রাস্তার গাড়িগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়, আর অনেকে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।

🏥 হাসপাতালে শোকের মাতম, কাঁদছে স্বজনরা

ট্রমা সেন্টারের বাইরে চলছে চোখের জলে বুকভাসানো মাতম। মৃতদের পরিবার ছুটে এসেছেন হাসপাতালে। নিবাই এলাকার হরসহায় মীনা জানান, তাঁর আত্মীয়রা সিকার থেকে ফিরছিলেন, তখনই ডাম্পার তাঁদের গাড়িকে ধাক্কা দেয়।

রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং খিঙ্ভসর বলেন, “১৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে, আরও অনেকে আশঙ্কাজনক। সরকার আহতদের চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করছে।”

🏛️ প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স (Twitter) এ লিখেছেন —
রাজস্থানের জয়পুরে দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে গভীরভাবে মর্মাহত। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতরা দ্রুত সুস্থ হোন এই প্রার্থনা করি।

তিনি ঘোষণা করেছেন, প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা জেলা প্রশাসনকে আহতদের চিকিৎসা ও তদারকির নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট টুইট করে বলেন —
হারমাড়ার দুর্ঘটনায় এতজনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। ঈশ্বর তাঁদের আত্মাকে শান্তি দিন এবং পরিবারকে শক্তি প্রদান করুন।

🚨 ড্রাইভার পলাতক, পুলিশের তদন্ত শুরু

দুর্ঘটনার পর ডাম্পার চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং চালকের সন্ধানে অভিযান চলছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, হারমাড়া রোডে প্রতিদিনই ভারী যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল হয়, কিন্তু প্রশাসন কোনও নজরদারি করে না। তাঁরা দাবি তুলেছেন, এখনই স্পিড ব্রেকার ও নাইট পেট্রোলিং চালু করতে হবে।

⚠️ স্থানীয়দের ক্ষোভ: “এটা দুর্ঘটনা নয়, প্রশাসনের হত্যালীলা!”

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন,
এই মৃত্যু রোধ করা যেত। কিন্তু প্রশাসন ঘুমোচ্ছে। যদি সময়মতো স্পিড কন্ট্রোলার বসানো হত, আজ এত পরিবার অন্ধকারে ডুবে যেত না।

ঘটনার পর হারমাড়া ও আশপাশের এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা রাস্তা অবরোধ করে চালকের গ্রেফতারি ও প্রশাসনিক জবাবদিহি দাবি করেছেন।

🕯️ রক্ত, ধুলো আর কান্নায় ঢেকে গেল জয়পুরের রাস্তা

দুর্ঘটনার পর জয়পুরের রাস্তায় এখন কেবল রক্তের দাগ, ভাঙা গাড়ি আর কান্নার শব্দ।
এই ভয়াবহ ট্র্যাজেডি রাজস্থানবাসীকে প্রশ্ন করতে বাধ্য করছে —
“কবে থামবে এই বেপরোয়া গতির তাণ্ডব?”

ghanty

Leave a comment