রণীগঞ্জ (পশ্চিম বর্ধমান): রাণীগঞ্জ ব্লকের তিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দামোদর নদীর ঘাটে অবৈধভাবে বালি পাচার রমরমিয়ে চলছে। জাল চালান এবং ওভারলোড ট্রাক ও ট্র্যাক্টরের মাধ্যমে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে বালি তোলা ও পাঠানো হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, বাঁকুড়া জেলার মেজিয়া থানার অন্তর্গত ভারা মৌজা থেকে বালি উত্তোলনের সরকারিভাবে টেন্ডার দেওয়া হলেও, প্রকৃত উত্তোলন হচ্ছে শালতোড়ের সাহেবগঞ্জ ঘাট থেকে, আর বালি পাঠানো হচ্ছে রাণীগঞ্জের তিরাট ঘাট থেকে। চালানে উৎস দেখানো হচ্ছে মেজিয়া, কিন্তু গাড়ির চালকরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন যে মাল এসেছে তিরাট ঘাট থেকে।
ওভারলোডিং-এ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ রাস্তাঘাট
১৬ চাকা ট্রাকে ৪০ থেকে ৬০ টন পর্যন্ত ওভারলোড বালি তোলা হচ্ছে, যেখানে ট্র্যাক্টরে মাত্র ৬ টন অনুমোদিত হলেও, তাতে প্রায় ১০ টন বালি চাপানো হচ্ছে। যার ফলে ১০ টনের ক্ষমতাসম্পন্ন গ্রামীণ সড়কগুলো ভেঙে পড়ছে।
চালান ইস্যু করা হচ্ছে পুরুলিয়া জেলার নামে, অথচ বালি পৌঁছাচ্ছে আসানসোলের বিভিন্ন এলাকায়। একাধিক ট্র্যাক্টর জাল চালান নিয়ে দিব্যি চলছে।
নেতা ও প্রশাসনের নীরবতা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন
বালি পাচার নিয়ে বিজেপি নেতাদের নীরবতা বর্তমানে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনের মদতেই চলছে এই কালোবাজারি। গত ১৩ এপ্রিল রাতে, স্থানীয়রা যখন ওভারলোড ট্রাক আটকে দেন, তখন তাদের হুমকি দেওয়া হয় এবং জয়দেব পাল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার নামে মিথ্যা মামলাও দায়ের করা হয়।
নিমচা ফাঁড়ি ইনচার্জের বদলি ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
১৪ এপ্রিল, জয়দেব পালের গ্রেপ্তারের মাত্র দুই দিন পরই নিমচা ফাঁড়ির ওসির বদলি করা হয়, যা এই ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে মনে করছেন অনেকেই। স্থানীয়দের মতে, এই বদলির পেছনে দুর্নীতিগ্রস্ত চক্রকে রক্ষা করার চেষ্টা চলছে।
বিএলআরও-র হুঁশিয়ারি: “তদন্ত হবে, দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত”
এই বিষয়ে রাণীগঞ্জের বিএলআরও জানিয়েছেন, যদি অন্য স্থান থেকে মাল উঠছে অথচ চালান অন্য কোথাও থেকে ইস্যু হচ্ছে, তাহলে এটি গুরুতর অপরাধ এবং তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।