আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান:
আসানসোল শহরের হিরাপুর থানার অন্তর্গত এমটিসি পল্লি গার্লস স্কুল এলাকায় আটটি পথকুকুরকে বিষ খাওয়ানোর একটি হৃদয়বিদারক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ, হিরাপুর ধর্মতলা এলাকার বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল রাতের অন্ধকারে কুকুরগুলির খাবারে বিষ মিশিয়ে দেয়। এর জেরে তিনটি কুকুর ঘটনাস্থলেই মারা যায়, দু’টির অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক, আর বাকি তিনটি কুকুর এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ।
প্রতিদিন ওই কুকুরদের খাওয়াতেন স্থানীয় পশুপ্রেমী সুমিত ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, কয়েকদিন আগে বিকাশ মণ্ডলের একটি মুরগি কুকুরের আক্রমণে মারা যায়। সেই থেকেই বিকাশ ক্ষিপ্ত ছিলেন এবং সুমিতকে প্রকাশ্যে হুমকি দেন— “এলাকার সব কুকুরকে আমি মেরে ফেলব।” এরপরই তিনি রাতে খাবারে বিষ মিশিয়ে আটটি কুকুরকে খাওয়ান বলে দাবি।
পরদিন সকালে খাবার দিতে এসে সুমিত তিনটি কুকুরকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। আরও দু’টি কুকুর রক্তবমি করতে করতে লুটিয়ে পড়ে। তাদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং স্যালাইন চলছে। চিকিৎসকদের মতে, ওই দু’টি কুকুরের বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। বাকি তিনটি কুকুরকে খুঁজে বের করতে এলাকার একাধিক পশুপ্রেমী রাতদিন তল্লাশি চালাচ্ছেন।
এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে সুমিত ভট্টাচার্য, লিপিকা চক্রবর্তী, পার্থ গাঙ্গুলি, রিংকু প্রসাদ, শনি সিং-সহ বহু পশুপ্রেমী হিরাপুর থানায় বিক্ষোভ দেখান এবং অবিলম্বে বিকাশ মণ্ডলের গ্রেফতারের দাবি জানান। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং অভিযুক্তকে ধরতে তল্লাশি চলছে।
স্থানীয় পশুপ্রেমীদের বক্তব্য, “একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এভাবে প্রাণীদের ওপর নৃশংসতা চলতে পারে না। পশুরাও এই সমাজের অংশ, তাদের বাঁচার অধিকার আছে।” এই ঘটনায় আসানসোল জুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।