সত্যেন্দ্র যাদব, কুলটি থেকে: কুলটির ওয়ার্ড নম্বর ৭০-এর লোকো লাইনের হরিজন বস্তিতে গতকাল রাতে ছঠ পূজার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকা মহিলাদের এবং পুরুষদের উপর আচমকা লাঠি, রড ও তলোয়ার দিয়ে হামলা চালানো হয়। এই হামলায় তিন জনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং তিন মহিলা গুরুতরভাবে আহত হন। আহতদের বারাকর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে, এবং এলাকায় এই ঘটনার পর ক্রোধ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, লোকো লাইনে পূর্ব থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে জুয়া নিয়ে বিরোধ চলছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,অন্ডাল মোড়ের কাছে বসবাসরত দুই সন্ত্রাসী প্রথমে এক যুবককে মারধর করে, তারপর রাতে প্রায় বারোটার সময় হরিজন বস্তিতে ঢুকে চড়াও হয়। আকাশ সাও ও তার সহযোগীরা উপস্থিত মানুষের উপর লাঠি ও তলোয়ার নিয়ে হামলা চালায়।
এই ঘটনার ফলে ৩০ বছর বয়সী সিকান্দার হরিজনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং তাকে তিনটি সেলাই করতে হয়েছে। একইভাবে মহেন্দ্র দাস এবং সন্তোষ রবিদাসও গুরুতরভাবে আহত হন, যেখানে সন্তোষের হাতেও আঘাত লাগে। লক্ষণ রবিদাসের হাত ও কোমরে গুরুতর আঘাত পাওয়া গেছে।
সন্ত্রাসীরা ছঠ উপবাসী মহিলাদেরও রেহাই দেয়নি। কবিতা দেবী এবং রেখা দেবী, যারা ঝগড়া থামাতে গিয়েছিলেন, তারাও আহত হন, এবং শান্তি দেবীর হাত ভেঙে যায়। এমনকি বৃদ্ধা মালতি দেবী, যিনি ছঠ পূজার উপবাস রেখেছিলেন, তাকেও মারধর করা হয়, যার ফলে বস্তির মানুষ আতঙ্কিত অবস্থায় আছেন এবং পুলিশের কাছে ন্যায়বিচার চাচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, হরিজন হওয়ার কারণে প্রায়ই এই ধরনের নির্যাতনের শিকার হন, এবং তাদের অভিযোগ শোনা হয় না।
প্রশাসন ও পুলিশের পদক্ষেপ
ওয়ার্ড নম্বর ৭০-এর কাউন্সিলর বকিল দাস বলেন যে তিনি এই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানেন না এবং এখনও পর্যন্ত কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি। কুলটি থানার ইনস্পেক্টর ইনচার্জ কৃষ্ণেন্দু দত্ত জানান যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ তাদের খুঁজে বের করার জন্য তল্লাশি চালাচ্ছে। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।
এই ঘটনায় হারিজন বস্তির মানুষরা ভয়ে ও ক্ষোভে ভুগছেন এবং প্রশাসনের কাছ থেকে ন্যায়বিচার দাবি করছেন।