“দোস্ত দোস্ত না রহা!” দুর্গাপুরে বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতায় তরুণী ধর্ষিতা

unitel
single balaji

📰 দুর্গাপুর (প্রেম শঙ্কর চৌবে): ১৯৬৪ সালে মুক্তি পাওয়া হিন্দি সিনেমা ‘সঙ্গম’–এর সেই অমর গান “দোস্ত দোস্ত না রহা, পেয়ার পেয়ার না রহা” যেন বাস্তবে পরিণত হয়েছে দুর্গাপুরে। এক তরুণী চিকিৎসা-শিক্ষার্থীর জীবনে সেই বন্ধুত্বই এখন ভয়ঙ্কর অভিশাপ। বন্ধুত্বের মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক শয়তানের চক্রান্তে কেঁপে উঠেছে সমগ্র শহর।

💔 ওড়িশা থেকে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন, আর মালদার বন্ধুত্ব

২৩ বছর বয়সী এক তরুণী, ওড়িশার জেলেশ্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে আসে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। ভর্তি হয় এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় মালদার বাসিন্দা ওয়াসিফ আলির। পড়াশোনার সূত্রে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব—আর সেই বন্ধুত্বেই জন্ম নেয় অন্ধ বিশ্বাস।

তরুণী ভেবেছিলেন, বন্ধু মানেই ভরসা। সেই বিশ্বাসের জেরেই তিনি এক রাতে কলেজ থেকে ডিনারে বেরিয়ে যান ওয়াসিফের সঙ্গে।

😈 কিন্তু গল্পে আসে ভয়ঙ্কর মোড়…

শুক্রবার, ১০ অক্টোবরের রাত। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়—সন্ধ্যা ৭টা ৫৮ মিনিটে ওয়াসিফ ও তরুণী একসঙ্গে কলেজ থেকে বের হচ্ছেন। ৮টা ৪২ মিনিটে ওয়াসিফ একা ফিরছেন, আর ৯টা ২৯ মিনিটে ফের একসঙ্গে ফিরছেন দু’জন। পুলিশের মতে, এর মধ্যবর্তী সময়েই ঘটে যায় সেই ভয়ঙ্কর অপরাধ। আলোহীন, নির্জন পথে ঘটে যায় চিকিৎসা ছাত্রীটির উপর নৃশংস নির্যাতন।

তরুণীর বাবা পুলিশের কাছে স্পষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছেন—“মেয়ের সবচেয়ে বড় শত্রু ছিল তারই তথাকথিত বন্ধু।”

🚔 পুলিশের তৎপরতা ও ওয়াসিফের ভূমিকা

দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন—“ওয়াসিফ আলির ভূমিকা প্রথম থেকেই সন্দেহজনক ছিল। টানা চার দিন জেরা শেষে তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে রিকনস্ট্রাকশন করানো হয়। পরে মেলানো হয় একাধিক প্রমাণ, এবং তার পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার করা হয়।”

পুলিশ জানিয়েছে, ওয়াসিফের পরনে থাকা পোশাকও সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।

⚖️ মামলার ধারা ও তদন্ত

  • কেস নম্বর: NTS PS Case No. 131/2025
  • তারিখ: 11.10.2025
  • ধারা: BNS Act 2023-এর 70(1)/3(5)
  • তদন্তকারী অফিসার: সাব-ইন্সপেক্টর গৌতম বিশ্বাস
  • তরুণীর বয়ান: ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে 164 ধারা অনুযায়ী রেকর্ড করা হয়েছে।

🩸 মেডিক্যাল রিপোর্টে ভয়াবহ তথ্য

  • ধর্ষণের স্পষ্ট চিহ্ন
  • যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষত
  • চামড়া ছিঁড়ে যাওয়া
  • অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ

🚨 গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তরা

  1. শেখ রিয়াজউদ্দিন ওরফে মন্তু (৩১)
  2. ফিরদৌস শেখ (২৩)
  3. আপু বাউরি (২১)
  4. নাসিরউদ্দিন শেখ ওরফে সম্রাট (২৩)
  5. সাফিক শেখ (২৮)
  6. ওয়াসিফ আলি (২৬) — ভুক্তভোগীর সহপাঠী

💣 অভিযুক্তদের পেশা ও পটভূমি

একজন আগে কলেজে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করতেন, কিন্তু অনৈতিক আচরণের জন্য পাঁচ বছর আগে বহিষ্কৃত হন। অন্য একজন বর্তমানে অন্য এক হাসপাতালে কর্মরত। কেউ পৌরসভার অস্থায়ী কর্মী, কেউ আবার বেকার। পুলিশের ধারণা—এদের মধ্যে কয়েকজনের অতীতেও অপরাধমূলক ইতিহাস থাকতে পারে।

⚡ শহরে ক্ষোভ ও উত্তেজনা

দুর্গাপুর, কলকাতা, আসানসোল—সব জায়গায়ই মানুষের ক্ষোভ তুঙ্গে। নারীরা রাস্তায় নেমে এক সুরে বলছেন—“আমরা রাত reclaim করব, ভয় নয়, ন্যায় চাই।”

ghanty

Leave a comment