ওয়াসিফের ভূমিকায় চাঞ্চল্য! ছাত্রী ধর্ষণকাণ্ডে গ্রেপ্তার সহপাঠী

unitel
single balaji

দুর্গাপুর:
শোভাপুরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ছাত্রী ধর্ষণকাণ্ডে এবার সামনে এল বড়ো মোড়। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন — “প্রযুক্তিগত প্রমাণ অনুযায়ী এই ঘটনাটি গ্যাংরেপ নয়।” তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাতে একমাত্র এক যুবকই ছাত্রীটির উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে।

এই ঘটনায় ছাত্রীর বন্ধু ওয়াসিম আলি ওরফে ওয়াসিফ-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক বলে জানিয়েছে কমিশনারেট। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘একজনই ধর্ষণ করেছে’, জানালেন পুলিশ কমিশনার

সুনীল চৌধুরী বলেন,

“ভুক্তভোগীর বয়ান ও প্রাপ্ত ফরেনসিক ও প্রযুক্তিগত প্রমাণের ভিত্তিতে দেখা গেছে, যৌন নির্যাতনের ঘটনায় একজনই যুক্ত ছিল।”

তিনি জানান, ঘটনাটির পরপরই এফআইআর দায়ের করা হয় এবং পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর ফোন উদ্ধার হয়, যা অভিযুক্তরা ছিনিয়ে নিয়েছিল। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুনর্গঠনও করা হয়।

বন্ধু ওয়াসিফের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ গভীর হচ্ছে

ভুক্তভোগীর বাবা অভিযোগে নাম লেখান মেয়েরই এক সহপাঠীর — ওয়াসি আলি ওরফে ওয়াসিফ। শুক্রবার রাতে সে মেয়েটিকে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যায়। দু’জন কাছের জঙ্গলে গিয়েছিল বলে জানা যায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওয়াসিফের উপর প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল। টানা চারদিন ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মঙ্গলবার তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনাপুনর্গঠন করা হয়। পুলিশের হাতে আসে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ, তারপরই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার আদালতে তোলা হবে তাকে।

‘বন্ধুর পোশাক জব্দ, ফরেনসিক রিপোর্টে মিলবে চূড়ান্ত সত্য’

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত বন্ধুর পরনের পোশাক ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট ও ডিএনএ পরীক্ষার ফল এলেই প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে।

কমিশনার বলেন,

“ভুক্তভোগীর বন্ধুর বক্তব্যে অনেক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। তার আচরণ ও তথ্য পরস্পরবিরোধী। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

ছয় অভিযুক্ত এখন পুলিশের হেফাজতে

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে —
অপু বাউরি (২১), শেখ ফিরদৌস (২৩), শেখ রিয়াজউদ্দিন (৩২), শেখ নাসিরউদ্দিন (২৪), শেখ শফিকুল, এবং ওয়াসিম আলি ওরফে ওয়াসিফ (ছাত্রীটির সহপাঠী)।

ঘটনার পটভূমি

২৩ বছরের দ্বিতীয় বর্ষের এমবিবিএস ছাত্রী শুক্রবার রাতে বন্ধুর সঙ্গে খেতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে জঙ্গলের কাছে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাদের উপর চড়াও হয়। ছাত্রীটিকে জঙ্গলের ভিতর টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। পরে তারা তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং ₹৩,০০০ দাবি করে। না দিলে পালিয়ে যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, ভুক্তভোগীর মেডিকেল রিপোর্টে স্পষ্টভাবে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,

“ছাত্রীটির যৌনাঙ্গে গভীর আঘাত, অভ্যন্তরীণ টিস্যু ফেটে গেছে এবং রক্তপাত হয়েছে।”

‘ন্যায় চাই, রাজ্য ছাড়তে হবে মেয়েকে’ — বাবার কান্নাভেজা আবেদন

ভুক্তভোগীর বাবা জানিয়েছেন, “আমার মেয়ে এই রাজ্যে নিরাপদ নয়। আমি তাকে এখান থেকে সরিয়ে নিতে চাই।”
রাজ্যজুড়ে এই ঘটনায় ক্ষোভ তীব্র হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন।

ghanty

Leave a comment