দুর্গাপুর, ২৫ অক্টোবর: দুর্গাপুরের অমরাই এলাকায় কালীমায়ের প্রতিমা বিসর্জনের সময় শুক্রবার গভীর রাতে চরম উত্তেজনা ছড়ায়। এক সামান্য তর্কাতর্কি মুহূর্তে ভয়ঙ্কর সংঘর্ষে পরিণত হয়। এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান হীরালাল সাহা এবং এক ভ্যানচালককে বেধড়ক মারধর করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে অমরাই স্কুলপাড়া মোড়ে, রাত প্রায় ১২টার সময়। সূত্রের খবর, প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি চলছিল, তখনই অভিজিৎ স্বর্ণকার নামের এক বাউন্সার হঠাৎ ভ্যানচালকের সঙ্গে ঝামেলা শুরু করে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে মারধর করে। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও, কিছু সময় পর অভিজিৎ তার ভাইকে নিয়ে ফিরে আসে এবং আবারও ভ্যানচালকের উপর হামলা চালায়।
এ সময় ওয়ার্ড চেয়ারম্যানের আত্মীয় শম্ভু সাহা প্রতিবাদ করলে, বাউন্সার ও তার ভাই তাকেও মারধর করে। খবর পেয়ে ওয়ার্ড চেয়ারম্যান হীরালাল সাহা নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করতে যান, কিন্তু তাকেও রেহাই দেওয়া হয়নি — তাঁকেও বাউন্সাররা নির্মমভাবে মারধর করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাউন্সাররা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। সংঘর্ষের সময় ভ্যানটি উল্টে যায় এবং কালীমায়ের প্রতিমা ভেঙে পড়ে, ফলে এলাকায় চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বহু মানুষ চোখে জল নিয়ে বলেন, “এভাবে মায়ের প্রতিমা ভাঙা — এটা আমাদের ধর্মীয় অপমান।”
ঘটনার খবর পেয়ে দুর্গাপুর থানার পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ভাঙা প্রতিমার মাঝে পুলিশের উপস্থিতিতে বিসর্জন সম্পন্ন হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত অভিজিৎ স্বর্ণকারের বাবাকে আটক করা হয়েছে, তবে অভিজিৎ ও তার ভাই বর্তমানে পলাতক। পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
হীরালাল সাহা বলেন, “আমি ভ্যানচালককে বাঁচাতে গিয়েছিলাম, কিন্তু অভিজিৎ ও তার ভাই মিলে আমার উপরেই চড়াও হয়। আমি বিষয়টি পুলিশ ও দলের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এমন ঘটনার কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার।”
এ ঘটনার পর থেকেই অমরাই ও আশেপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ নজরদারি জোরদার করেছে এবং এলাকায় টহল চালানো হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি তুলেছেন — “যে-ই হোক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এভাবে দাঙ্গা বরদাস্ত করা যাবে না, প্রশাসন যেন কঠোর ব্যবস্থা নেয়।”












