দুর্গাপুরের শোভাপুরে আবারও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে উত্তাল পরিস্থিতি। মাত্র কয়েকদিন আগেই গুলির লড়াইয়ের সাক্ষী ছিল এই হাসপাতাল, আর এবার নিরঞ্জয় দেওয়াসি (৩২) নামে এক ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যুকে ঘিরে ফুঁসে উঠল গোটা এলাকা।
কী ঘটেছিল?
কাঁকসার গাংবিল এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জয়, দুর্গাপুরের অঙ্গদপুরের একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানায় ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন তিনি। দ্রুত তাকে ভর্তি করা হয় দুর্গাপুর ইএসআই হাসপাতালে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই স্থানান্তরিত করা হয় শোভাপুরের ওই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পরিবারের বিস্ফোরক অভিযোগ
নিরঞ্জয়ের বৌদি অমৃতা দেওবাসী জানান, রাতেই পরিবার হাসপাতালে পৌঁছলেও প্রথমে নিরঞ্জয়কে দেখতে দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে অল্প সময়ের জন্য দেখা করতে দেওয়া হলেও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দেয় যে রোগী ঠিক হয়ে যাবে। সকালে পরিবারের সদস্যরা জোর করে ওয়ার্ডে ঢুকে দেখতে পান, নিরঞ্জয়ের মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে এবং হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছেন তিনি।
পরিবারের দাবি, হাসপাতালের তরফে চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল মারাত্মক। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না দেওয়াতেই মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত ও কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট না করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে।
উত্তেজনা ছড়াল হাসপাতাল চত্বরে
সোমবার সকাল থেকে বিক্ষুব্ধ পরিবার ও স্থানীয় মানুষজন হাসপাতালের মূল ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে হাসপাতালে এবং তার আশপাশের এলাকায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
কয়েকদিন আগেও ঘটেছিল গুলি চলার ঘটনা
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই একই হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়েছিল যে, কয়েক রাউন্ড গুলির ঘটনাও ঘটেছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার নতুন করে উত্তাপ ছড়াল দুর্গাপুরের এই বেসরকারি হাসপাতালে।