দুর্গাপুরের গ্রাফাইট কারখানায় সোমবার দুপুরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গরম পিচ ছিটকে জখম তিন শ্রমিককে ঘিরে এলাকায় চরম চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে কোকওভেন থানার পুলিশ। শ্রমিক সংগঠন সূত্রে খবর, কাজ চলছিল স্বাভাবিক মতোই—ঠিক সেই সময় ওপরে ওয়েল্ডিং চলছিল। হঠাৎই ওয়েল্ডিং-এর আগুন নিচে থাকা গরম পিচের সংস্পর্শে আসতেই মুহূর্তের মধ্যে আগুনের গোলায় পরিণত হয় গোটা এলাকা।
জখম হন তিন শ্রমিক—অভিজিৎ ভুঁই, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, এবং মৃণাল রায়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হন মৃণাল রায়, যার শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঝলসে গেছে। তিনজনকেই তড়িঘড়ি বিধাননগরের একটি বেসরকারি মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক তীর্থ মুখোপাধ্যায় জানান—
“তিনজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। মৃণাল রায় অত্যন্ত সংকটজনক। সকলেই গুরুতরভাবে আগুনে ঝলসে গেছেন। চিকিৎসা চলছে।”
মৃণাল রায়ের অবস্থা ক্রমশ অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের দাবি, আহত শ্রমিকদের শরীরে ৫০–৭০ শতাংশ পর্যন্ত বার্ন ইনজুরি রয়েছে।
নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন শ্রমিকরা
ঘটনার পর কারখানার সামনে উত্তেজনা ছড়ায়। সিপিএম শ্রমিক সংগঠন সিটু নিরাপত্তার চরম অবহেলার অভিযোগ তোলে। তাদের দাবি—
✔ কারখানায় নিয়মিত নিরাপত্তা-বিধি মানা হয় না
✔ শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত সেফটি ইকুইপমেন্ট নেই
✔ ওয়েল্ডিং ও পিচ ট্যাঙ্কের কাজ একসঙ্গে হওয়া মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ
সিটুর শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য,
“মালিক পক্ষের অবহেলা না থাকলে আজ তিনজন শ্রমিক আগুনে পুড়ে যেতেন না। কারখানায় সেফটি অডিটের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের।”
এদিকে কোকওভেন থানার পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কারখানার নিরাপত্তা অডিটের নথি চাওয়া হয়েছে বলেও সূত্রের খবর।
ঘটনার জেরে গ্রাফাইট কারখানার শ্রমিকরা আতঙ্কে—পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালের সামনে রাত কাটাচ্ছেন প্রিয়জনের সুস্থতার আশায়।












