“দামোদর সবাইকে গিলে ফেলবে!” — কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূল মন্ত্রীদের বিস্ফোরণ

single balaji

আসানসোল | পশ্চিম বর্ধমান:
দামোদর নদীর বুকে গাদ জমে নদী যেন মরতে বসেছে — অথচ কেন্দ্রীয় সরকার ঘুমোচ্ছে! এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাজ্যের তিন মন্ত্রী আসানসোলের কুলটি বিধানসভা এলাকার ডিভিসি মুখ্য প্রকৌশলীর দফতরের সামনে তীব্র বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি করেন।

💬 “ফাইলের রাজনীতি চলতে থাকলে দামোদর সবাইকে গিলে ফেলবে!” — মলয় ঘটক

রাজ্যের আইন, শ্রম ও বিচারমন্ত্রী মলয় ঘটক ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন,

“প্রথমে গাদ সরিয়ে ব্যারাজ সংস্কার করুন, তারপর আন্দোলনের কথা বলুন। দামোদর নদীতে বাঁধ তৈরি হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত একবারও ড্রেজিং হয়নি! নদীর জলধারণ ক্ষমতা এখন এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। ফলে সামান্য জল ছাড়লেই মৈথন ও পঞ্চেত বাঁধের নিচের এলাকা প্লাবিত হয় — মানুষ মারা যায়, গৃহপালিত পশু ভেসে যায়, কৃষিজমি তলিয়ে যায়।”

তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার ও ডিভিসির বিরুদ্ধে আঙুল তুলে বলেন,

“রাজ্য ক্ষতিপূরণ চাইলেও কেন্দ্র চুপ থাকে। তারা বলে তিন দিন জল না নামলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে না — কিন্তু ততক্ষণে তো ঘরবাড়ি ভেসে যায়, মানুষ মারা যায়!”

⚡ “কেন্দ্র দেশের ফেডারেল কাঠামো ভেঙে দিয়েছে” — মানস ভুঁইঞা

সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইঞা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ করে বলেন,

“দামোদর নদীর উপর সাতটি বাঁধ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়েছে মাত্র পাঁচটি। তেনুঘাট এখনও ঝাড়খণ্ড সরকারের নিয়ন্ত্রণে। কেন্দ্র শুধু রিপোর্ট দেখছে, কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এখনই যদি ড্রেজিং না হয়, দামোদর হবে মৃত্যুর ফাঁদ।”

🗣️ “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই আন্দোলন আরও জোরদার হবে” — প্রদীপ মজুমদার

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন,

“কেন্দ্রের অবহেলা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যজুড়ে এই আন্দোলন চলছে। এটি শুধু রাজনীতি নয়, মানুষ ও কৃষিজমি বাঁচানোর লড়াই।”

🚧 দুই মিছিলে দ্বিমুখী সংঘর্ষের আবহ

অন্যদিকে, একই দিনে দুর্গাপুর ব্যারাজের সামনে বিজেপি কর্মীরা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। বিজেপির দাবি, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করছে না, আর নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই কেন্দ্রকে দোষারোপ করছে।

🌧️ দামোদর সংকট আরও গভীর

বিশেষজ্ঞদের মতে, দামোদর নদীর ড্রেজিং না হলে আসন্ন বর্ষায় মৈথন ও পঞ্চেত ড্যামের নিচের এলাকা স্থায়ী বন্যা অঞ্চল (Permanent Flood Zone) হয়ে উঠতে পারে। নদীর গাদ সরানোর কাজ জরুরি না হলে পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়ার বহু গ্রাম চিরস্থায়ী বিপদের মুখে পড়বে।

ghanty

Leave a comment