আসানসোল, ৩ ডিসেম্বর: আসানসোলের সাতগ্রাম শ্রীপুর এলাকার কেন্দ্রীয় কোলিয়ারি এবং ডিপো থেকে ট্রাকে করে কয়লা চুরির ঘটনায় তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সাতগ্রাম গেট সংলগ্ন ডিপো থেকে শনিবার গভীর রাতে এই চুরির ঘটনা সামনে আসে।
কীভাবে ঘটল এই চুরির ঘটনা?
সাতগ্রাম শ্রীপুর অঞ্চলের জে কে নগর কোলিয়ারির এজেন্ট মনোজ কুমার জানিয়েছেন, শনিবার রাতে প্রায় সাড়ে বারোটার সময় একটি ট্রাক সাতগ্রাম শ্রীপুর এলাকার কেন্দ্রীয় ডিপোতে জোর করে ঢুকে পড়ে। ট্রাকটি ডিপোর কয়লা তুলে দ্রুত এলাকা ছেড়ে পালায়। নিরাপত্তারক্ষীদের অভিযোগ, ট্রাকচালক ও তার সঙ্গীরা তাদের হুমকি দেয়। এরপর নিরাপত্তারক্ষীরা কর্তৃপক্ষকে জানায় এবং পুলিশের সাহায্য চায়।
পুলিশি অভিযান ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার
শ্রীপুর ফাঁড়ি পুলিশ এবং ইসিএলের নিরাপত্তারক্ষীরা জে কে নগর মোড়ের কাছে ট্রাকটিকে আটকায়। ট্রাকটি প্রায় ৫০ টন কয়লা বহন করছিল। পুলিশ ট্রাকটি বাজেয়াপ্ত করে এবং চালককে গ্রেপ্তার করে। ডিপোর কর্মকর্তারা কালিচরণ বাউরি নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন, যিনি কয়লা তোলার জন্য এই জোরজবরদস্তি করেছিলেন।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
ডিপোর নিরাপত্তারক্ষীরা যখন ট্রাকটি প্রবেশ করে, তখন কেন দ্রুত কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অনেকে বলছেন, নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ যোগসাজশ থাকতে পারে। এছাড়াও, সাতগ্রাম শ্রীপুর অঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার উপেন্দ্র সিং-এর ফোন না তোলার ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের নিচু থেকে উপর স্তরের নেতারা এই কয়লা চুরির সঙ্গে জড়িত। পশ্চিম বর্ধমান জেলার নব্বই শতাংশ তৃণমূল নেতার এই দুর্নীতির সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে। অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা ভি শিবদাসন জানিয়েছেন, যারা এই কাজে জড়িত, তাদের দল কোনভাবেই সমর্থন করবে না। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
জনপ্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, এই চুরির পেছনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মদত থাকতে পারে। ইসিএলের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে বিশদ তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে।