পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল-সালানপুর থানার অন্তর্গত রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির ডোমদোহা উপার ডাঙা এলাকায় ২৩ এপ্রিল সিআইএসএফ জওয়ান সুনীল পাসওয়ান (৪৫) খুনের মামলায় নয়া মোড়। সীমান্তের এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত যুবরাজ সিং-কে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে খুনের ক্রাইম সিন পুনর্গঠন করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই এই পুনর্গঠন চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল তা ধাপে ধাপে দেখিয়ে দেন যুবরাজ। কোথায় বসেছিলেন, কীভাবে ‘গোগো’ নামের নেশা নিচ্ছিলেন, কোন পথে পালিয়েছিলেন— সবই খুঁটিয়ে রেকর্ড করে তদন্ত দল। সেই সময় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মোটরবাইক, মদের বোতল এবং রক্তের দাগও ফের মিলিয়ে দেখা হয়।
পুনর্গঠনের সময় যুবরাজ পুলিশের কাছে স্বীকার করে— সেদিন সুনীল পাসওয়ানের জায়গায় বসে নেশা করছিলেন তিনি। হঠাৎ সিআইএসএফ জওয়ান এসে তাঁর কলার চেপে ধরে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন এবং হাতে ধরা মদের বোতল দিয়ে ভয় দেখান। পাল্টা যুবরাজ ভয় দেখানোর জন্য গুলি চালালেও, সুনীল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। শেষমেশ মাথায় লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান যুবরাজ।
এই মামলায় প্রথমে পুলিশ গ্রেফতার করে রাহুল গুপ্ত ওরফে ‘মুরগি’-কে। তার জেরাতেই উঠে আসে যুবরাজ সিং-এর নাম। এরপর জামতোড়া কোর্টের মাধ্যমে আবেদন করে অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে আসে রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ি। বর্তমানে যুবরাজ ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছে এবং ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়েছেন।
পুলিশ ইতিমধ্যেই বিহার থেকে উদ্ধার করেছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ এবং ফরেনসিক রিপোর্ট মিলিয়ে মামলার চার্জশিট তৈরির প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় এই খুনের ঘটনায় এখনও আতঙ্কের আবহ, তবে পুলিশের দাবি— শীঘ্রই পুরো চক্রটিকে গ্রেফতার করে ফেলা হবে।