কিশনগঞ্জ: বিহার-বাংলা সীমান্তে অবস্থিত রামপুর আলু-পেঁয়াজের মাণ্ডি হঠাৎ করে বন্ধ করে দিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কোনও সরকারি নোটিশ ছাড়াই, এনএইচ-২৭-এ মোতায়েন করা হয়েছে বাংলা পুলিশ। এই নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে কিশনগঞ্জ জেলার ২৫ লক্ষ মানুষের ওপর, যারা সম্পূর্ণভাবে রামপুর মাণ্ডির ওপর নির্ভরশীল।
বাজার বন্ধ, বাড়ছে সঙ্কট:
রামপুর মাণ্ডির প্রায় ৯০% আলু-পেঁয়াজ কিশনগঞ্জ জেলায় ব্যবহৃত হয়। মাণ্ডি বন্ধ হওয়ায় ব্যবসায়ীদের যেমন বড় ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই সাধারণ মানুষকে চড়া দামে আলু-পেঁয়াজ কিনতে হতে পারে। আগামী দিনে কালোবাজারি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করা হচ্ছে।
“ইটের বদলে পাথর”: কিশনগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যানের হুঁশিয়ারি
কিশনগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান ইন্দ্রদেব পাসওয়ান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যদি মাণ্ডি চালু না হয়, তবে কিশনগঞ্জের মানুষও পশ্চিমবঙ্গে ওষুধ, পোশাক, রেশন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন। তিনি বলেন, “বাংলা সরকারের এই পদক্ষেপ অসাংবিধানিক এবং এর কড়া জবাব দেওয়া হবে।”
মাণ্ডির ওপর নির্ভরতা এখন সঙ্কটের কারণ
তিন দশক আগে এই মাণ্ডি কিশনগঞ্জ শহরেই ছিল। তবে সেলট্যাক্স দফতরের চাপের কারণে এই মাণ্ডি স্থানান্তরিত হয় রামপুরে, যা পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত। সেই থেকে এই মাণ্ডি কিশনগঞ্জের মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে। কিন্তু এই নির্ভরতাই এখন সঙ্কট ডেকে এনেছে।
সীমান্তে আটকে রয়েছে কয়েক ডজন গাড়ি
বর্তমানে রামপুর মাণ্ডির বাইরে আলু-পেঁয়াজ বোঝাই কয়েক ডজন গাড়ি আটকে রয়েছে। গাড়িগুলোকে মাণ্ডির ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, যার ফলে ব্যবসায়ীরা বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
বাড়ছে ক্ষোভ, উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি
এই ইস্যুতে কিশনগঞ্জে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে। অনেক ব্যবসায়িক সংগঠন এবং স্থানীয় নেতারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। তবে, এই সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনা করতে যাওয়া কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ভবিষ্যতে কী হতে চলেছে?
স্থানীয় মানুষ ও ব্যবসায়ীরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান দাবি করছেন। কিশনগঞ্জের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে যে, যদি পরিস্থিতি শীঘ্রই উন্নত না হয়, তবে তারা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্যও সঙ্কটে পড়তে পারেন।