বাংলাদেশিদের জন্য হোটেলে ‘নো এন্ট্রি’! শিলিগুড়ি ও মালদায় বড় সিদ্ধান্ত

single balaji

কলকাতা:
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজের উপর ধারাবাহিক হামলা ও যুবকদের নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে ক্ষোভ ক্রমশ তীব্রতর হচ্ছে। সেই প্রতিবাদের ঢেউ এবার কলকাতায় আছড়ে পড়ল। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের উদ্যোগে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন অভিমুখে এক বিশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে কমিশনের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

এই বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রায় এক হাজারেরও বেশি সাধু ও সন্ন্যাসী। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ওই এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী।

ছয় দফা দাবি পেশ

বিক্ষোভ চলাকালীন একটি প্রতিনিধিদল ডেপুটি হাই কমিশনের কাছে ছয় দফা দাবিনামা জমা দেয়। দাবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

  • দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তি
  • দায়িত্বে গাফিলতি করা পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
  • বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজ ও ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
  • গুজব ও উস্কানিমূলক প্রচারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় দীপু চন্দ্র দাস এবং ২৪ ডিসেম্বর রাজবাড়িতে অমৃত মণ্ডল নামে এক যুবককে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়। অভিযোগ, অমৃতকে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগে পিটিয়ে মারা হয়।

শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি

বিক্ষোভস্থলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,
“দীপু দাসের হত্যাকাণ্ড এবং বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ এখানে এক হাজার সাধু একত্রিত হয়েছেন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বার্তা দিতে চাই। কিন্তু অত্যাচার যদি না থামে, তাহলে গঙ্গাসাগর মেলায় আগত পাঁচ লক্ষ সাধু এখানে এসে বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হবেন।”

শিলিগুড়ি ও মালদায় বাংলাদেশিদের হোটেলে নিষেধাজ্ঞা

এদিকে, সীমান্তবর্তী শহর শিলিগুড়িতে এক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গ্রেটার শিলিগুড়ি হোটেলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশি নাগরিকদের হোটেলে থাকার উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ জানান,
“ব্যবসার আগে দেশ। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান উত্তেজনার কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের হোটেলে চেক-ইন বন্ধ থাকবে।”

তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে।

কৌশলগত গুরুত্বে শিলিগুড়ি করিডোর

শিলিগুড়ি করিডোর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে দেশের মূল ভূখণ্ডের সংযোগস্থল। এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা এবং বাংলাদেশি পর্যটক ও ভিসাধারীদের একটি বড় প্রবেশদ্বার।

অ্যাসোসিয়েশনের আওতায় থাকা প্রায় ১৮০টি হোটেল এই নির্দেশ মেনে চলছে। পাশাপাশি, সংগঠনের বাইরে থাকা আরও প্রায় ৫০টি হোটেল স্বেচ্ছায় এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে।

মালদাতেও একই সিদ্ধান্ত

শুধু শিলিগুড়ি নয়, মালদা জেলাতেও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মালদা হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, যার অধীনে প্রায় ২৫০টি হোটেল রয়েছে, তারাও বাংলাদেশি নাগরিকদের থাকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

এই সিদ্ধান্তে রাজ্য রাজনীতিতে ও সীমান্তবর্তী এলাকায় নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

ghanty

Leave a comment