পশ্চিম বর্ধমানের শিল্পনগরী আসানসোল সোমবার সকাল থেকে একটানা মুষলধারে বৃষ্টিতে কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়ে। দুপুর গড়াতেই শহরের একাধিক এলাকায় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যেন রাস্তাঘাট নদীতে পরিণত হয়েছে। মানুষের ঘরে পানি ঢুকে পড়ে, যান চলাচল থমকে যায়।
স্টেশন রোডের রেলওয়ে ব্রিজের নিচে, রেল পারাপারের ব্রিজের নিচে, ডোমহানি যাওয়ার ব্রিজের নিচে, চাঁদমারি ব্রিজের নিচে এবং বর্ণপুরের ত্রিবেণী মোড়ের আগে রেলওয়ে ব্রিজের নিচে হ্রদের মতো জল জমে যায়। রাস্তায় হাটাচলা থেকে শুরু করে গাড়ি চালানো—সব কিছু প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। বহু মোটরবাইক ও ছোট গাড়ি জলমগ্ন হয়ে বিকল হয়ে পড়ে।
স্থানীয় এক মহিলা বলেন, “প্রতিবছর বর্ষার সময় এই অবস্থা হয়, কিন্তু এবার জল এতটাই জমেছে যে বাড়ি থেকে বেরনোটাই কঠিন হয়ে গেছে।” স্টেশন রোডের ব্যবসায়ী সঞ্জয় সিং বলেন, “গ্রাহকরা আসতে পারেননি, গাড়িগুলোও আটকে গেছে। প্রশাসনের উচিত আগে নিকাশির ব্যবস্থা করা।”
শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সঠিক নিকাশির ব্যবস্থা না থাকাতেই এহেন দুরবস্থা তৈরি হয়েছে। বর্ষার বৃষ্টি যতটা দায়ী, প্রশাসনের উদাসীনতাও ততটাই দায়ী বলে তাঁদের দাবি।
অন্যদিকে, আসানসোল পৌরনিগমের তরফে বলা হয়েছে, পাম্পিং মেশিন বসিয়ে পানি নামানোর কাজ চলছে। ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিক ভলান্টিয়াররা মিলে জলবন্দি মানুষদের সাহায্য করছেন। তবে নাগরিকদের অভিযোগ, এটি কেবল অস্থায়ী সমাধান—স্থায়ী নিকাশির পরিকল্পনা না করলে প্রতি বছরই একই চিত্র দেখা যাবে।
বৃষ্টির জেরে শহরের স্কুলগুলিতে উপস্থিতি কমে যায়, অনেক অফিসকর্মী দেরি করে পৌঁছন বা যেতে পারেননি। বাজারের ব্যবসাও একেবারে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বৃষ্টির ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হতে থাকে এবং তাতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন সাধারণ মানুষ।












