[metaslider id="6053"]

সিলিকোসিসে মৃত্যু, সরকারের ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিপূরণের দাবি

আসানসোল, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪: সালানপুর ব্লকের দেন্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বারভুইন গ্রামের বাসিন্দা সুবল রায় (২৯) সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর প্রশাসন শকড হয়ে পড়েছে। গত শনিবার একটি পত্রিকায় এই বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। সংবাদ প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দল মৃতের বাড়িতে গিয়ে তার রোগ সম্পর্কিত সমস্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে।

এই দলটি ছিল—জেলা টিউবারকুলোসিস অফিসার (DTO) ড. অভিষেক রায়, সালানপুর ব্লক স্বাস্থ্য মেডিকেল অফিসার (BMOH) ড. সুব্রত সীট, জেলা টিউবারকুলোসিস সেন্টারের মেডিকেল অফিসার (MO) ড. স্বাতী ব্যানার্জী, সিনিয়র ট্রিটমেন্ট সুপারভাইজার (STS) রথীন রায় এবং স্থানীয় অশা কর্মী লেখানি হানসদা। তারা মৃতের পরিবারের কাছে জানায় যে, ৬ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে একটি বোর্ড মিটিং অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই মিটিংয়ে সুবল রায়ের রোগ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য উপস্থাপন করতে হবে।

IMG 20241228 WA0016

এদিকে, সোমবারই মৃতের পরিবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (জেনারেল) সুভাষিণী ই এর কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে, যেখানে অভিযোগ করা হয় যে, সিলিকোসিস রোগের ভুল চিকিৎসা হওয়ায় সরকারী হাসপাতালে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। মিসেস সুভাষিণী ইতিবাচক আশ্বাস প্রদান করেছেন এবং জানিয়েছেন যে, ওই এলাকায় টিউবারকুলোসিসে আক্রান্ত সকলের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে এবং বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করা হবে।

সিলিকোসিসে মৃত্যুর অভিযোগ এবং প্রশাসনের কার্যকলাপ:

সালানপুর ব্লকে বহু রেমিংমাস শিল্প (কোয়ার্টজ পাথরের ধূলা পরিষ্কার করার কারখানা) রয়েছে যেখানে শত শত শ্রমিক কাজ করেন। অভিযোগ উঠেছে যে, এখানে কর্মরত শ্রমিকরা সিলিকোসিসে আক্রান্ত হচ্ছেন, এবং অনেকেই সরকারী হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা পাচ্ছেন। এর মধ্যে বারভুইন গ্রামের বাসিন্দা জগন্নাথ রায় (৩০) কয়েক মাস আগে এবং সুবল রায় গত ২০ ডিসেম্বর মারা যান। এনএইচআরসি (জাতীয় মানবাধিকার কমিশন) এই দুটি মামলায় সমীক্ষা গ্রহণ করেছে এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে।

IMG 20241228 WA0014

নির্বাচন চিকিৎসার অভিযোগ:

অভিযোগ উঠেছে যে, সিলিকোসিস রোগের পরিবর্তে ভুলভাবে টিউবারকুলোসিসের চিকিৎসা চলানো হচ্ছে, যার ফলে রোগীরা অকাল মৃত্যু ঘটছে। মৃতের আত্মীয়রা জানাচ্ছেন যে, সুবল রায়ের কাশি পরীক্ষা সলানপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২৪ এপ্রিল টিউবারকুলোসিসের কোনও লক্ষণ দেখায়নি, কিন্তু তারপরও তাকে টিউবারকুলোসিসের চিকিৎসা দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ভুল চিকিৎসা চলতে থাকার কারণে সুবলের স্বাস্থ্য আরও খারাপ হয়ে যায়, এবং সিলিকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার বদলে সে আগেই মৃত্যুবরণ করে।

এদিকে, অমরনাথ মাহাতো যিনি এই বিষয়ে এনএইচআরসিতে অভিযোগ দায়ের করেছেন, জানিয়েছেন যে, কর্মী ক্ষতিপূরণ আইন অনুযায়ী, যখন একজন কর্মী সিলিকোসিসে আক্রান্ত হন, তখন তাকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা উচিত এবং তার কোম্পানির পক্ষ থেকে তার জীবিত অবস্থায় বেতন প্রদান করা হয়। কিন্তু ডাক্তাররা সিলিকোসিস রোগ দ্রুত চিহ্নিত করতে চান না, যার ফলে অনেক শ্রমিক সঠিক সময়েই সিলিকোসিসের চিকিৎসা পান না এবং তারা ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হন।

এই সমস্যার প্রতিকার হিসেবে প্রশাসনের আরো তৎপরতার প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

ghanty

Leave a comment