আসানসোল, বার্নপুর রোড, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭, সাত বছর আগে মুথুট ফাইন্যান্স কোম্পানির শাখায় ঘটে যাওয়া বহুল আলোচিত ১০ কোটি টাকার স্বর্ণ ডাকাতি মামলায় সোমবার (২০ নভেম্বর) আসানসোল আদালতে নতুন মোড়। বিহারের কুখ্যাত “গ্যাংস্টার” সুবোধ সিং এবং তার ৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন সেই শাখার তৎকালীন অপারেশন ম্যানেজার সুবোধীপ কোনার।
ডাকাতির বিবরণ:
২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর, সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে বার্নপুর রোডের কোর্ট মোড় সংলগ্ন শাখায় হেলমেট পরিহিত ছয়জন ডাকাত গেট খুলে ভেতরে ঢুকে পড়ে। বন্দুকের মুখে পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে আটক করে এবং অপারেশন ম্যানেজারকে ভয় দেখিয়ে লকারের চাবি ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতরা প্রায় ১০ কোটি টাকার স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ অর্থ লুট করে বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়।
কোর্টে চিহ্নিত অপরাধী:
অপারেশন ম্যানেজার সুবোধীপ কোনার আদালতে উপস্থিত সুবোধ সিং ও ঠাকুর নবরং সিংকে সরাসরি চিহ্নিত করেন। বাকিদের ভিডিও কনফারেন্সে কলকাতার আলিপুর সেন্ট্রাল জেল এবং বিহারের বেউর জেল থেকে শনাক্ত করা হয়। সুবোধ সিংয়ের দুই সহযোগী আলিপুর জেলে এবং আরও দুইজন বিহারের বেউর জেলে রয়েছেন। ঠাকুর নবরং সিং, যিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন, আদালতে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত ও বর্তমান পরিস্থিতি:
ডাকাতির ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করে হিরাপুর থানার বিশেষ দল এবং আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ। পরে এটি রাজ্য পুলিশের সিআইডি বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সোমবার সুবোধ সিংকে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেল থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আসানসোল আদালতে আনা হয়। কোর্টে অপারেশন ম্যানেজার বলেন, “ডাকাতদের হেলমেটও সিআইডি কোর্টে নিয়ে আসা হয়েছিল। আমি সেগুলিও শনাক্ত করেছি।”
সুবোধ সিংয়ের প্রতিক্রিয়া:
সকালে সুবোধ সিং যখন কারাগারের ভ্যান থেকে কোর্ট লকআপে যাচ্ছিলেন, সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন। উত্তরে তিনি হেসে বলেন, “আপ লোক, হামকো দেখকে বোর নেহি হো রহে?” (আপনারা কি আমাকে দেখে বোর হচ্ছেন না?)।
পরবর্তী শুনানি:
ডাকাতি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় বিচারক অরূপ রায় আগামী ২৮ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন আবার অপারেশন ম্যানেজারকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য কোর্টে হাজির থাকতে হবে।