আসানসোলঃ সোমবার আসানসোল জিটি রোডে ইস্টার্ন রেলওয়ে হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের সামনে দখল উচ্ছেদ করতে গিয়ে প্রবল বাধার মুখে পড়ে রেল পুলিশ। স্থানীয় মানুষজন ও ফুল বিক্রেতাদের পাশাপাশি সরাসরি ময়দানে নেমে আসেন তৃণমূল শ্রমিক নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়া। শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভ, স্লোগানবাজি ও উত্তেজনার কারণে খালি হাতে ফিরতে হয় রেল পুলিশকে।
রেল প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্কুলের প্রধান গেট ও পাশের গেট ঘিরে বিপুল সংখ্যক দোকান গড়ে উঠেছে। এগুলি সম্পূর্ণ বেআইনি এবং রেলের কার্যক্রমে গুরুতর সমস্যা তৈরি করছে। দোকানের আবর্জনা রাস্তায় ফেলে দেওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, স্কুলে পড়ুয়াদের আসা-যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে, গাড়ি পার্কিংয়ে অসুবিধা তৈরি হচ্ছে। এমনকি অভিভাবকেরা বহুবার লিখিত অভিযোগ করেছেন। এই কারণেই উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রেলের ডিআরএম বিনীতা শ্রীবাস্তব জানান – “আসানসোল শহরকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। রেলওয়ে স্কুলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে, তাই এর চারপাশে অবৈধ দখলদারি চলতে দেওয়া যায় না। অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ।”
অন্যদিকে তৃণমূল নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়া পাল্টা সুর চড়িয়ে বলেন – “দুর্গাপুজো, ছটপুজো ও গণেশ পুজোর মতো বড় উৎসব সামনে। এই সময়ে গরিব পরিবারগুলো ফুল বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে। ওদের জীবিকা কেড়ে নেওয়া অন্যায়। আমরা তা কোনোভাবেই মেনে নেব না।”
এই ঘটনার পর এলাকায় রাজনৈতিক পারদ চড়তে শুরু করেছে। বিজেপি নেতা সুব্রত ওরফে মিঠু ঘাঁটি অভিযোগ করেছেন, “রেল জমিতে বেআইনি দোকান চালিয়ে তৃণমূল নেতারাই কোটি কোটি টাকা রোজগার করছেন। কাটমানি আর চাঁদাবাজি চলছে দীর্ঘদিন। তাই উচ্ছেদে এত আপত্তি।”
এই ঘটনায় রেল পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উৎসবের মরশুমে সাধারণ মানুষের জীবিকা বনাম শহরের সৌন্দর্য— কোনটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, তা নিয়ে বিতর্ক চরমে পৌঁছেছে।