আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান:
শহরের অন্যতম নামী ইংরেজি মাধ্যম প্রতিষ্ঠান A.G. Church School-এ ভর্তি কেলেঙ্কারির অভিযোগ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত এজেন্ট ‘লোটাস’-কে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এবার স্কুলের সেক্রেটারি সাবরিনা লাকড়া (৩৫)-কে গ্রেপ্তার করেছে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, সাবরিনা লাকড়া বি.এস.ইউ.পি. কোয়ার্টার, টি/৮, শ্রীনগর (আসানসোল নর্থ থানা এলাকা)-র বাসিন্দা।
তার বিরুদ্ধে কেস নম্বর ৪৮১/২০২৫-এ BNS Act-এর ধারা ৩১৮(৪)/৩১৬(২)/৩৩৮/৩৩৬(৩)/৩৪০(২)/৬১(২) অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
তাকে ২২ অক্টোবর ২০২৫ সকালে গ্রেপ্তার করা হয়।
📜 ঘটনাটি কী?
অভিযোগ, এই নামী স্কুলে ভর্তি করে দেওয়ার নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হচ্ছিল।
স্কুল পরিচালনা কমিটির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলা দ্বন্দ্বের মধ্যেই AGNII নামের এক পক্ষ পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এজেন্ট লোটাস-কে প্রথমে আটক করা হয়।
এফআইআরে অভিযোগ করা হয় যে, লোটাস স্কুল প্রশাসনের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে যোগসাজশ করে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করানোর নামে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছে।
অভিযোগে যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন —
👉 স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জেসিকা স্পেনসার,
👉 সেক্রেটারি সাবরিনা লাকড়া,
👉 কর্মী নিবেদিতা চক্রবর্তী ও তপেন্দ্রনাথ দাস।
🔍 তদন্তে উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য
রেভারেন্ড জর্জ কুট্টি, জয়েস দেবদাস এবং অ্যাডভোকেট বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়-এর নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানা গেছে,
পাঁচজন ছাত্রছাত্রী — মহীরা অর্জু, আলিজা কুলসুম, তানজিলা ফাতিমা, আনিজা খান ও ভানিয়া বিজদান-এর ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়ম পাওয়া গেছে।
তদন্তে জানা গেছে, অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছিল, এবং সেই টাকা সংগ্রহ করত লোটাস, যে স্কুলের ভিতরের কিছু কর্মচারীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখত।
⚡ সাবরিনা লাকড়ার গ্রেপ্তারিতে প্রশাসনে চাঞ্চল্য
এই গ্রেপ্তারের পর এখন গোটা স্কুল প্রশাসন তোলপাড়।
পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে একাধিক ব্যাংক লেনদেন ও কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ফলে আগামী দিনে আরও কয়েকজনের নাম উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক অভিভাবকের বক্তব্য —
“আজকাল পড়াশোনাও ব্যবসা হয়ে গেছে! যেখানে স্কুলে ভর্তি হতে টাকা দিতে হয়, সেখানে শিক্ষার পবিত্রতা কোথায়?”
🗣️ পরিচালনা কমিটির দুই পক্ষ মুখোমুখি
এক পক্ষের অভিযোগ —
“তদন্ত শেষ না করেই হঠাৎ এফআইআর করা হয়েছে, এটা রাজনৈতিক চাল।”
অন্য পক্ষের দাবি —
“তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, এখন গ্রেপ্তারির পর সব সত্যি সামনে আসবে।”
🚨 পুলিশের সক্রিয়তা
আসানসোল উত্তর থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন,
“এটি শহরের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত একটি সংবেদনশীল মামলা। সমস্ত দিক থেকে তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজন হলে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”