ভর্তি না টেন্ডার? স্কুল প্রশাসনের ভেতরে চলছে টাকার খেলা, উঠল বড় অভিযোগ!

unitel
single balaji

আসানসোল:
আসানসোলের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান A.G. Church School-এ ভর্তি কেলেঙ্কারির অভিযোগ ঘিরে গোটা শহরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্কুল পরিচালন সমিতির দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের মধ্যেই এক গোষ্ঠী (AGNII)-এর দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত এজেন্ট ‘লোটাস’-কে গ্রেফতার করেছে।

সূত্রের খবর, ‘লোটাস’ আসানসোল বাজারের এক ব্যবসায়ী, যিনি জুতার দোকান চালান। কিন্তু এই দোকানের আড়ালেই তিনি ‘ভর্তি র‍্যাকেট’ চালাতেন বলে অভিযোগ। স্কুলে একাধিক ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করানোর জন্য তিনি অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন।

📜 তদন্তের সূচনা ও চাঞ্চল্যকর তথ্য

A.G. Church School-এর ভাইস চেয়ারম্যান রেভারেন্ড জর্জ কুট্টি ভি.সি. এই অভিযোগে আসানসোল উত্তর থানায় এফআইআর দায়ের করেন।

এফআইআরে বলা হয়েছে, ২৩ জুলাই ২০২৫-এ তাঁরা A.C.P., Central I-এর কাছ থেকে একটি চিঠি পান, যেখানে মোনিকা নিধি ডি’ক্রুজ নামে এক মহিলার অভিযোগের উল্লেখ ছিল।

অভিযোগে বলা হয়, ‘লোটাস’ নামের এক এজেন্ট স্কুল প্রশাসনের কিছু সদস্যের সঙ্গে যোগসাজশে ভর্তি করানোর নামে বড় অঙ্কের ঘুষ নিতেন।

অভিযোগে নাম রয়েছে—

  • স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জেসিকা স্পেন্সার,
  • সচিব সাবরিনা লাকরা,
  • ও কর্মী নিবেদিতা চক্রবর্তীতপেন্দ্রনাথ দাস-এর।

🔍 তদন্ত কমিটি ও বিস্ফোরক তথ্য

এরপর রেভ. জর্জ কুট্টির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যাতে সদস্য ছিলেন জয়েস দেবদাসঅ্যাডভোকেট বিশ্বদেব চ্যাটার্জি।

তদন্তে উঠে আসে, পাঁচজন ছাত্রছাত্রীর ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছিল।
তাদের নাম—
মাহিরা অর্জু, আলিজা কুলসুম, তানজিলা ফাতিমা, আনাইজা খান এবং ওয়ানিয়া উইজদান।

কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা টাকার বিনিময়ে ভর্তি করা হয়েছে, আর এই টাকা ‘লোটাস’-এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে, যার সঙ্গে স্কুলের কিছু কর্মীর সরাসরি সম্পর্ক ছিল।

⚡ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নতুন মোড়

তবে তদন্ত কমিটির সদস্য জয়েস দেবদাস এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান,

“তদন্ত তখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তারপরও হঠাৎ করে এফআইআর দায়ের করা হল কেন, বোঝা যাচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন,

“যদি চেয়ারম্যানের কোনও আপত্তি ছিল, তা হলে প্রথমে কমিটির মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে জানানো উচিত ছিল।”

অন্যদিকে, স্কুল পরিচালন সমিতির আরেক গোষ্ঠীর দাবি—

“তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এখন ‘লোটাস’-এর গ্রেফতারির পর সত্যিটা প্রকাশ পাবে।”

⚖️ পুলিশের তৎপরতা ও ভবিষ্যৎ তদন্ত

পুলিশ ইতিমধ্যেই লোটাসকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
সূত্রের খবর, স্কুল প্রশাসনের অন্যান্য সদস্যদেরও জেরা করা হতে পারে।

এই ঘটনায় A.G. Church School-এর ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শহরের অভিভাবক মহলে ক্ষোভ ও উদ্বেগের আবহ বিরাজ করছে।

🗣️ স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

“ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জায়গায় এখন টাকার খেলা চলছে! শিক্ষা যেমন পবিত্র স্থান, সেখানে যদি দুর্নীতি ঢোকে, তা সমাজের জন্য ভয়ানক সংকেত,”— বলেন এক স্থানীয় অভিভাবক।

এই ঘটনার পর আসানসোলের শিক্ষাঙ্গনে বড় প্রশ্ন উঠেছে —
👉 ‘শিক্ষা এখন আদর্শ না ব্যবসা?’
👉 ‘স্কুলে ভর্তি মানে কি এখন শুধুই টাকার খেলা?’

ghanty

Leave a comment