আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান:
আসানসোল রেলপার এলাকার জাহাঙ্গিরি মহল্লায় বুধবার বিকেলে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তৃণমূল নেতা শাকিল আহমেদের বাড়ির সামনে শতাধিক মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের দাবি— শাকিল আহমেদের ছেলে তাহসিন আহমেদ প্রায় ৩ হাজার বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে ₹৪৫০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ প্রতারণা করে নিয়েছে, এবং এখন সেই টাকাই ফেরত দিতে হবে।

💰 অভিযোগ: হাজার হাজার মানুষের জীবনজমানো টাকা উধাও!

আসানসোল উত্তর থানার বাসিন্দা মৌটুসি দত্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, যেখানে তিনি জানান— তাহসিন আহমেদ তাঁর কাছ থেকে ₹২০ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন।
অন্যদিকে, অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ অফিসার রবীন্দ্র সিং বলেন,

“প্রথমে ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। কিছু ভালো রিটার্ন পাওয়ার পর ধীরে ধীরে বিনিয়োগ বাড়িয়ে ৪১ লক্ষে পৌঁছে যাই। এখন টাকা ফেরত তো দূর, ফোন ধরছেন না তাহসিন!”

রবীন্দ্র সিং-এর দাবি, অনেকেই ₹১.৫ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছিলেন, এবং এখন পুরো অর্থই ডুবে গেছে।

⚖️ রাজ্যের আইনমন্ত্রী বললেন “টাকা ফেরতের চেষ্টা চলছে”

রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক আশ্বাস দিয়েছেন যে, ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ ফেরাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবরকম উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে বিরোধীরা তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

🔥 শুভেন্দু অধিকারীর বিস্ফোরক অভিযোগ:

বিজেপি নেতা ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করে অভিযোগ করেন—

“আসানসোলে ₹৩৫০ কোটির চিটফান্ড কেলেঙ্কারি ঘটেছে। তৃণমূল নেতা শাকিল আহমেদের ছেলে তাহসিন আহমেদ নকল কোম্পানির মাধ্যমে ৩ হাজার পরিবারের কাছ থেকে টাকা তোলে, এবং উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে তাদের ঠকিয়ে দেয়।”

তিনি দাবি করেন, এই প্রতারণা তৃণমূলের ছত্রছায়ায় ঘটেছে। তাই তাহসিন আহমেদের গ্রেপ্তারি, সেবি ও ইডির তদন্ত, এবং ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ ফেরতের দাবি জানান।

🗣️ তৃণমূলের পাল্টা ব্যাখ্যা

তৃণমূল সংখ্যালঘু সংগঠনের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি মাহফুজুল হাসান জানান,

“শাকিল আহমেদ এখন আর তৃণমূলের কোনও পদে নেই। তাঁর ছেলে প্রতারণা করার পরই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”

🧾 AIMIM-ও নামল মাঠে

এআইএমআইএম জেলা সভাপতি দানিশ আজিজ আসানসোলের বিএনআর মোড়ের কফি হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে জানান—

“তাহসিন আহমেদ বেকার যুবক ও সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার পিতা শাকিল আহমেদ আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় আজও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন—

“যদি তাহসিন আহমেদ পালিয়ে যায়, তাহলে কি মলয় ঘটক নিজে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরত দেবেন?”

দানিশ আজিজ বলেন, এখন জনগণ নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছে।

🧨 স্থানীয়দের ক্ষোভ

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য,

“এত বড় চিটফান্ড কেলেঙ্কারি, অথচ প্রশাসন চুপ! আমরা আমাদের ঘামঝরা টাকাটা ফেরত চাই।”