[metaslider id="6053"]

আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে রাতারাতি উধাও ৩২১ জন্তু! হাই কোর্টে শুনানি

🔍 কলকাতা: দেশের প্রাচীনতম আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে রাতারাতি ৩২১টি পশু-পাখি ‘হাওয়া’ হয়ে গেছে! ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষে যেখানে পশু-পাখির সংখ্যা ছিল ৬৭২, সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুতেই তা নেমে এসেছে মাত্র ৩৫১-তে। অর্থাৎ এক রাতেই ৩২১টি প্রাণীর অদৃশ্য হওয়া নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে।

এই ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। শহরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্বজন আদালতের দ্বারস্থ হয়ে গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।

📊 সংখ্যায় গোলমাল, বিপন্ন প্রাণীর হিসাব মিলছে না

স্বজন জানিয়েছে, আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যায় বহু বছরের ধরেই ভয়ঙ্কর গরমিল রয়েছে। যেমন:

  • ২০১১ সালের মার্চে প্রাণী ছিল ১৪৫২টি,
  • ২০২৪ সালের মার্চে তা কমে দাঁড়ায় ৬৭২-এ।
  • ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ ছিল ১১৮৬টি প্রাণী,
  • ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল ছিল ৯১০টি — এক রাতেই কমে ২৭৬টি!

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয়, এই প্রাণীদের মধ্যে বহু বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীও ছিল। ২০২২ সালে বিপন্ন প্রাণীর ক্লোজিং স্টক ছিল ১৯০, অথচ পরের দিনের ওপেনিং স্টকে দেখা যায় মাত্র ১৩১টি — ৫৯টি বিপন্ন প্রাণীর বেনামি বিলুপ্তি!

🧾 সরকারি নীরবতা ও বিক্রির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

স্বজনের অভিযোগ, সেন্ট্রাল জু অথরিটি (CZA), ওয়েস্ট বেঙ্গল জু অথরিটি (WBZA) এবং আলিপুর চিড়িয়াখানা প্রশাসন— কেউই এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো সরকারি বিবৃতি দেয়নি, এমনকি তদন্ত রিপোর্টও প্রকাশ করেনি।

সংস্থার বক্তব্য, সরকারের তরফে ইচ্ছাকৃতভাবে চিড়িয়াখানার পশু সংখ্যা কমিয়ে আলিপুরের ৩৪এ, বেলভেডিয়ার রোডের প্রায় ৩ একর জমি বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে। এখানেই চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি হাসপাতাল, রেসকিউ সেন্টার ও পাবলিক অ্যাকোয়ারিয়াম ছিল।

🗣️ জওহর সরকার ও মহালয়া চট্টোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক দাবি

বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ এবং প্রাক্তন আইএএস অফিসার জওহর সরকার বলেন, “এই পুরো ঘটনা হয় মারাত্মক অবহেলা, নয়তো এক গভীর ষড়যন্ত্র। রাজ্যবাসীকে এর জবাব দিতে হবে।”

স্বজনের মহালয়া চট্টোপাধ্যায় বলেন, “চিড়িয়াখানা শুধু বিনোদনের জায়গা নয়, এটা শহরের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষারও অংশ। আলিপুর চিড়িয়াখানার অন্তত ৫০ শতাংশ জায়গা সবুজ অথবা জলাভূমি। এই জায়গা বিক্রি করে ফেলা হলে শহরের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

🚫 চিড়িয়াখানা প্রশাসনের ‘সাবজুডিস’ অজুহাত

আলিপুর চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিরেক্টর অরুণ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “যা কিছু তথ্য আমাদের আছে, তা আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সাবজুডিস, তাই মন্তব্য করতে পারছি না।”

এদিকে বন দফতরের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ সপ্তাহের মধ্যে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে এই জন্তু-সংখ্যার গরমিল সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

ghanty

Leave a comment