স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল BSF জওয়ান গণেশ যাদবের

single balaji

জেকে নগর (রানিগঞ্জ): দেশবাসীর জন্য আরও এক হৃদয়বিদারক খবর। রানিগঞ্জ থানার নিমচা ফাঁড়ির অন্তর্গত চাপুই কলিয়ারি এলাকার বাসিন্দা, বিএসএফ জওয়ান গণেশ যাদবের অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। গত ১০ বছর ধরে সীমান্ত রক্ষায় নিযুক্ত এই বীর জওয়ান বর্তমানে মহারাষ্ট্রের পুনেতে বিএসএফ ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।

প্রায় এক বছর আগে স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা যাদব ও তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে পুনেতে বসবাস শুরু করেছিলেন গণেশ। সব কিছুই চলছিল স্বাভাবিকভাবে। কিন্তু ২৩ ডিসেম্বর হঠাৎই জীবনে নেমে আসে ভয়াবহ বিপর্যয়। রান্নার সময় আচমকাই গ্যাস পাইপলাইনে লিকেজ হয়ে রান্নাঘরে আগুন ধরে যায়।

WhatsApp Image 2025 12 25 at 16.11.26

স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে আগুনে জ্বলতে দেখে এক মুহূর্ত দেরি না করে ঝাঁপিয়ে পড়েন গণেশ। স্ত্রীর প্রাণ বাঁচলেও নিজে মারাত্মকভাবে অগ্নিদগ্ধ হন তিনি। সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে করতে বাইরে বেরিয়ে প্রতিবেশীর দরজায় কড়া নাড়েন। প্রতিবেশীরা দ্রুত কম্বল এনে দু’জনকে ঢেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় প্রাণ হারান বিএসএফ জওয়ান গণেশ যাদব। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা যাদব চিকিৎসাধীন।

শনিবার সকালে বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গণেশ যাদবের দেহ ফিরিয়ে আনা হয় তাঁর বাড়িতে। খবর পেয়ে আশপাশের এলাকার মানুষ ঢল নামান। হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে ‘ভারত মাতা কি জয়’ ও ‘গণেশ যাদব অমর রহে’ স্লোগানে আকাশ ভারী হয়ে ওঠে।

হাসিখুশি ও সহজ-সরল স্বভাবের এই জওয়ানের অকাল প্রয়াণে চাপুই-রুটিবাটি এলাকা জুড়ে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। পরে দামোদর নদীর ধারে দামড়া শ্মশানঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সেখানে নদীয়া জেলা থেকে আসা বিএসএফ-এর ১০ সদস্যের একটি দল তাঁকে গান স্যালুট দিয়ে জাতীয় সম্মানে শেষ বিদায় জানায়

সবচেয়ে হৃদয়বিদারক মুহূর্ত আসে যখন মৃত জওয়ানের মাত্র চার বছরের ছেলে আকাশ নিজ হাতে বাবার মুখাগ্নি দেয়। সেই দৃশ্য দেখে উপস্থিত হাজারো মানুষের চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে।

গণেশ যাদব রেখে গেলেন বৃদ্ধ বাবা-মা, দাদা, বৌদি এবং তিন সন্তানকে। দেশরক্ষার পাশাপাশি পরিবার রক্ষায় নিজের জীবন উৎসর্গ করা এই বীর জওয়ান চিরকাল মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন।

ghanty

Leave a comment