জামুড়িয়ায় নজরুল মঞ্চ থেকে শুভেন্দুকে পাল্টা আক্রমণ তৃণমূলের

single balaji

জামুড়িয়া:
জামুড়িয়ার টাউন হল সংলগ্ন নজরুল মঞ্চে শুক্রবার বিশাল জনসভা করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আগের সভার কড়া জবাব দিল তৃণমূল কংগ্রেস। সভা মঞ্চ থেকে একের পর এক অভিযোগে বিজেপি ও শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং বলেন, শুভেন্দু অধিকারী তাঁর সভায় বিহারিদের উদ্দেশে “এক বিহারি শত রোগ” ধরনের অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই বিষয়টি নিয়ে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি কেন নীরব? হরেরাম সিং স্পষ্ট করে বলেন,
“জামুড়িয়ায় সব সম্প্রদায়ের মানুষ সম্মানের সঙ্গে বসবাস করেন। কাউকে অপমান করা কখনওই মেনে নেওয়া হবে না।”

সিন্ডিকেট রাজের অভিযোগে পাল্টা আক্রমণ

জিতেন্দ্র তিওয়ারির সিন্ডিকেট রাজ সংক্রান্ত অভিযোগ খারিজ করে হরেরাম সিং বলেন, জামুড়িয়ায় কোথাও সিন্ডিকেট চলে না। এলাকায় বর্তমানে ২৫টি কারখানা সক্রিয়ভাবে চলছে, যা প্রমাণ করে বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

শুভেন্দু অধিকারীর জামুড়িয়ায় বিজেপির ২৫ হাজার ভোটে জয়ের দাবিকে কটাক্ষ করে হরেরাম সিং বলেন,
“এবার তৃণমূল কংগ্রেস ২৭ হাজার ভোটে জয়লাভ করবে।”

মালয় ঘটকের খোলা চ্যালেঞ্জ

রাজ্যের মন্ত্রী মালয় ঘটক শুভেন্দু অধিকারীকে প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন,
“শুধু বিধানসভা নয়, ওয়ার্ড স্তরেও সভা করে দেখান—জিততে পারবেন না।”
তিনি দাবি করেন, বিজেপি আগে কুলটি ও আসানসোল বিধানসভা জিতলেও এবার সেই আসনগুলিও হাতছাড়া হবে।

তিনি আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল-কেও আক্রমণ করে বলেন, তিনি শুধুমাত্র ভোটের সময় এলাকায় আসেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই।

কয়লা খনি, SIR ও ‘ভোট পাখি’ বিতর্ক

সভা থেকে অভিযোগ করা হয়, মোদি সরকারের আমলে জামুড়িয়া অঞ্চলের ৪০টি কয়লা খনি বন্ধ হয়ে গেছে, পাশাপাশি ইসিএল-এর একাধিক খনি কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল নেতারা বিজেপিকে “ভোট পাখি” বলে কটাক্ষ করে বলেন, ভোটের সময় উড়ে আসে, তারপর আর দেখা যায় না।

নেতারা আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি SIR (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন)-এর অজুহাতে সাধারণ মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করছে। বিজেপি আগে এক কোটি রোহিঙ্গার দাবি করলেও SIR প্রক্রিয়া শেষে একজন রোহিঙ্গাও পাওয়া যায়নি

স্নেহাশিস চক্রবর্তীর তোপ

রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন,
“এই নজরুল মঞ্চ থেকেই শুভেন্দু অধিকারী সভা করেছিলেন। আজ তারই রাজনৈতিক জবাব দেওয়া হল।”

তিনি বলেন, SIR প্রক্রিয়ার জেরে বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও ঝাড়খণ্ড থেকে আসা হিন্দু ও হিন্দিভাষী মানুষজন সমস্যায় পড়েছেন, যার দায় বিজেপি ও মোদি সরকারের।

তিনি তৃণমূল সরকারের প্রকল্পগুলির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, সবুজ সাথী-সহ একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে রাজ্যের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।
একইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশন যখন আধার কার্ডকে বৈধ নথি হিসেবে মানে না, তখন মোদি সরকার কেন সাধারণ মানুষের ওপর আধার লিঙ্কের চাপ চাপিয়েছে?

উপস্থিত নেতৃত্ব

সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী মালয় ঘটক, পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং, প্রেমপাল সিং, তৃণমূল নেতা সাধন রায়, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ পাওলি, জামুড়িয়া ব্লক-২ সভাপতি সুব্রত অধিকারী সহ বহু তৃণমূল নেতা ও কর্মী।

ghanty

Leave a comment