দুর্গাপুর:
দুর্গাপুরের ঐতিহ্যবাহী কল্পতরু মেলা ঘিরে শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র দখলদারি দ্বন্দ্ব। কে মেলার দায়িত্বে থাকবে—এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। বুকিং অফিস খোলা হলেও এখনও পর্যন্ত বুকিং প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন মেলায় অংশ নিতে ইচ্ছুক ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে পুলিশ প্রশাসন।
আগামী ১ জানুয়ারি থেকে দুর্গাপুরের গ্যামন এলাকায় শুরু হওয়ার কথা প্রায় ৫৭ বছরের প্রাচীন এই কল্পতরু মেলার। সম্প্রতি খুঁটি পুজো সম্পন্ন হওয়ার পর মেলার পাশেই দুর্গাপুর সাংস্কৃতিক মেলা কমিটির তরফে বুকিং কাউন্টার খোলা হয়। কিন্তু সেখানে বর্তমান কমিটির কোনও সদস্যকে দেখা যায়নি। বরং উপস্থিত ছিলেন পুরনো কমিটির সদস্যরা। এই নিয়েই শুরু হয়েছে চরম উত্তেজনা।
বর্তমান পরিচালন সভাপতি তথা দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপার্সেন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার-এর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। বিজেপি এই বিষয়কে হাতিয়ার করে কটাক্ষ ছুড়েছে শাসকদলের দিকে। বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,
“যেদিন থেকে কল্পতরু মেলা দুর্গাপুর নগর নিগমের হাতে গেছে, সেদিন থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। তৃণমূলের এক পক্ষ বলছে আমাদের কাছে বুকিং করতে হবে, অন্য পক্ষ বলছে আমাদের কাছে। এমন পরিস্থিতিতে চেয়ারপার্সেনকেই পুলিশে অভিযোগ জানাতে হচ্ছে।”
অন্যদিকে মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন,
“মেলা নিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে শুনেছি। আগেই বলেছিলাম সমস্যা হলে টেন্ডারের মাধ্যমে বিষয়টি পরিচালনা করা উচিত। এখন কীভাবে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
সবচেয়ে বেশি উদ্বেগে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সান্তনু মিশ্র নামে এক ব্যবসায়ী বলেন,
“কার কাছে বুকিং করব বুঝতেই পারছি না। আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। প্রয়োজনে মহকুমা শাসক ও জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।”
সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে—
নতুন বছরের আগে আদৌ কি কল্পতরু মেলার প্রস্তুতি শুরু করা যাবে, নাকি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই আটকে থাকবে দুর্গাপুরের এই ঐতিহ্যবাহী মেলা?











